বুধবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
বিভাগীয় গণসমাবেশ

সিলেটে রেকর্ড গড়তে চায় বিএনপি

টার্গেট ৪ লাখ মানুষ, সব কমিউনিটি সেন্টার বুকিং পরিবহন ধর্মঘট নিয়ে শঙ্কা

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

বিভাগীয় গণসমাবেশ ঘিরে সিলেটে বিএনপির প্রচার-প্রচারণা এখন তুঙ্গে। সমাবেশে ৪ লাখ মানুষের সমাগম ঘটিয়ে রেকর্ড গড়তে চান দলটির নেতারা। এ লক্ষ্যে বিরামহীন প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। তবে গণসমাবেশের আগে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক আসছে কি-না এ নিয়ে রয়েছে শঙ্কা। এ শঙ্কাকে সামনে রেখেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন দলের নেতারা। পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হলে আগেভাগে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে নেতা-কর্মীদের এনে সিলেট শহরে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ জন্য সিলেট শহরের প্রায় সবকটি কমিউনিটি সেন্টার বুকিং দিয়ে রাখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত দেশের যেসব বিভাগে বিএনপি গণসমাবেশ করেছে সবখানেই ডাকা হয়েছে ধর্মঘট। তবে এখন পর্যন্ত সিলেটে ধর্মঘটের ডাক আসেনি। সিলেটের পরিবহন নেতারাও ধর্মঘট নিয়ে খুব বেশি আগ্রহী নন। তবে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব থেকে ধর্মঘটের ইঙ্গিত এলে তবেই তারা ধর্মঘটের ডাক দেবেন বলে সূত্র জানিয়েছে। দেশের অন্যান্য স্থানে পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হলেও সিলেটে এর ব্যতিক্রম হবে বলে আশাবাদী বিএনপি নেতারা। যদিও পরিবহন ধর্মঘটের শঙ্কাকে একেবারেই উড়িয়ে দিচ্ছেন না তারা। ধর্মঘট পরিস্থিতিতে করণীয় ঠিক করতে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতারা। সর্বশেষ নেতা-কর্মীদের আগাম সিলেট শহরে নিয়ে আসার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নেতা-কর্মীদের আবাসনের জন্য গঠিত উপকমিটির দায়িত্ব দেওয়া হয় সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য আরিফুল হক চৌধুরীকে। গতকাল পর্যন্ত সিলেটের ২০টি কমিউনিটি সেন্টার বুকিং দিয়ে রাখা হয়েছে। যদি পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয় তবে ১৭ থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে নেতা-কর্মীরা ওইসব কমিউনিটি সেন্টারে উঠবেন। তাদের খাবারেরও ব্যবস্থা করবে দল। বিএনপি নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, সিলেটে স্মরণকালের বৃহৎ সমাবেশ করার চেষ্টা চলছে। দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে বিএনপি তাতে অংশ নেবে। আর সেই নির্বাচনে যারা দলীয় মনোনয়ন চান তাদের নিজ নিজ এলাকা থেকে গণসমাবেশে লোকজন আনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারাও নিজের ছবি ও নাম অঙ্কিত টিশার্ট, ক্যাপ, পোস্টার ও ফেস্টুন তৈরি করছেন। নিজের অনুসারী ও জনপ্রিয়তার জানান দিতে মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারাও ওইদিন শোডাউনের ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছেন।  গণসমাবেশের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ূম চৌধুরী জানান, গণসমাবেশ সফলে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। একদিকে চলছে প্রচারণা, অন্যদিকে সভাস্থলের প্রস্তুতি। ২১০০ বর্গফুটের মঞ্চ তৈরির কাজ চলছে। তিনি বলেন, ‘মানুষ এ সমাবেশকে নিজেদের কর্মসূচি হিসেবে গ্রহণ করেছেন। তাই সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া মিলছে। আমরা আশাবাদী গণসমাবেশে ৪ লাখ মানুষের উপস্থিতি হবে। এটা হবে সিলেটের স্মরণকালের বৃহৎ সমাবেশ।’ পরিবহন ধর্মঘটের শঙ্কা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি সিলেটের পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা ধর্মঘট ডাকবেন না। এরপরও ডাকা হলে নেতা-কর্মীরা বিকল্প পন্থায় সমাবেশে আসবেন। কোনো বাধা-বিপত্তি গণজোয়ার ঠেকাতে পারবে না।’ এ ছাড়া সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতারা প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত প্রচারণা চালিয়ে আসছেন। লিফলেট বিতরণ, সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগের মাধ্যমে তারা বিএনপির আন্দোলনে একাত্ম করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। লোকজনকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন।

এবারের আন্দোলন বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য করছে না। নিত্যপণ্যের মূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ এবং ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে তারা আন্দোলন করছেন। এভাবেই তারা দলীয় কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষকে একাত্ম করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর