শিরোনাম
শনিবার, ১ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা
ধর্ষণের পর খুন

চট্টগ্রামে শিকার হচ্ছে একের পর এক শিশু

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে একের পর এক ধর্ষণের শিকার হচ্ছে কোমলমতি শিশু। ধর্ষণের পরও ক্ষ্যান্ত হচ্ছে না ‘পিশাচ’রা, ঘটনা আড়াল করতে খুন করছে ভুক্তভোগী শিশুকে। গত এক বছরে চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় এমন ঘটনা সংঘটিত হয়েছে কমপক্ষে ১০টি। পুলিশের দাবি- নৈতিক অবক্ষয়ের কারণেই এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) মাহাতাব উদ্দিন বলেন, নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে শিশু ধর্ষণ ও খুনের মতো অপরাধগুলো ঘটছে। এসব ঘটনায় দেখা যাচ্ছে ভুক্তভোগীর পরিচিতজনই আবির্ভাব হচ্ছে ধর্ষক রূপে। প্রত্যেকটা ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনেছে। বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন (বিএইচআরএফ) মহাসচিব অ্যাডভোকেট জিয়া হাবিব আহসান বলেন, ‘বিগত সময়ে সংঘটিত অভিন্ন ঘটনাগুলোর যথাযথ বিচার না হওয়ায় একই ধরনের অপরাধ বারবার ঘটছে। এ ধরনের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত এমন অপরাধ থামবে না।’ জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরী ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক ধর্ষণ এবং ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হচ্ছেন শিশুরা। গত এক বছরে চট্টগ্রামে এমন ঘটনার শিকার হয়েছেন কমপক্ষে ১০ শিশু। এসব শিশুর বেশির ভাগেরই বয়স ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে। বেশির ভাগ শিশু পরিচিতজনের হাতে শিকার হয়েছে বর্বর নির্মমতার। কখনো চকলেট, বিরানি, কখনো পোষা প্রাণী দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করা হচ্ছে শিশুদের। পরে ধর্ষণের ঘটনা আড়াল করতে খুন করা হচ্ছে ভুক্তভোগী শিশুকে। গতকাল ৩১ মার্চ খুলশী থানাধীন কুসুমবাগ আবাসিক এলাকার লিফটের গর্ত থেকে পাঁচ বছরের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ২৯ মার্চ নগরীর পাহাড়তলী মুরগি ফার্ম এলাকা থেকে ১০ বছরের এক শিশুর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পিবিআই। এ শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় এক তরকারি বিক্রেতাকে। গত বছরের ১৫ নভেম্বর নগরীর ইপিজেড এলাকা থেকে নিখোঁজ হয় পাঁচ বছরের শিশু। নিখোঁজের ১০ দিন পর সাগর উপকূলীয় এলাকায় ওই শিশুর লাশের ছয় টুকরো উদ্ধার করে পিবিআই।

এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। ২৪ অক্টোবর নগরীর কোতোয়ালি থানা এলাকায় সাত বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে লক্ষণ দাশ নামে এক দোকান কর্মচারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ১২ সেপ্টেম্বর জেলার ফটিকছড়ি উপজেলায় দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মোহাম্মদ হানিফ নামে এক মাদরাসা শিক্ষককে গ্রেফতার করে পুলিশ। ১৮ সেপ্টেম্বর নগরীর বন্দর থানাধীন পোর্ট কলোনির ৮ নম্বর সড়কের মুখ থেকে সাত বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ওসমান হারুন মিন্টু নামে এক রিকশাচালককে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২৪ আগস্ট জেলার সাতকানিয়া উপজেলায় ৯ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় নুরুল ইসলাম নামে এক মাদরাসা শিক্ষককে। ১৩ মার্চ নগরীর হালিশহর থানা এলাকায় ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে। এ খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আলমগীর মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৫ মার্চ জেলার বোয়ালখালী উপজেলার চরণদ্বীপ আল্লামা শাহ অছিয়র রহমান হেফজখানা এবং এতিমখানায় বলাৎকারের ঘটনা ফাঁস করে দেওয়ার ভয়ে খুন করা হয় ১৫ বছরের এক শিশুকে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুই শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর