ঈদের আগে সুসংবাদ আসছে বিদ্যুৎ বিভাগে। আশার আলো হয়ে এসেছে বৃষ্টি। গত এক সপ্তাহ ধরে বৃষ্টি যেন বিদ্যুতের জন্য আশীর্বাদ। বৃষ্টি হলেই উৎপাদন বাড়ছে বিদ্যুৎ বিভাগে এবং কমছে চাহিদাও। কাপ্তাইয়ের ৫টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে শুষ্ক মৌসুমে বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো ২৫-৩০ মেগাওয়াট। গত কয়েকদিন ধরে ৬০-৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
পিডিবির চট্টগ্রাম দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম বলেন, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটির পরিবর্তে দুটি ইউনিটে উৎপাদন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ৬৫ মেগাওয়াট করে দুই ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। আগের তুলনায় এখন তেমন লোডশেডিং নেই। ঈদের সময়ে লোডশেডিং থাকবে না।
কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী এ টি এম আবদুজ্জাহের বলেন, সম্প্রতি বৃষ্টি শুরু হওয়া ও উজান থেকে পানি নামায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে একটি ইউনিট দিয়ে মাত্র ২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন হলেও বর্তমানে দুটি ইউনিট হতে উৎপাদন হচ্ছে ৬০-৬৫ মেগাওয়াট। কাপ্তাই হ্রদে পানি বাড়লে, বিদ্যুৎ উৎপাদনও বাড়বে। আমাদের সর্বোচ্চ উৎপাদন সক্ষমতা ২৩০ মেগাওয়াট।
জানা গেছে, বর্তমানে কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে রেশনিং পদ্ধতিতে দুটি করে ইউনিট পরিচালনা করা হচ্ছে। যার মধ্যে প্রতি সেকেন্ডে ১১ হাজার ৪১৫ কিউসেক পানি ছাড়া হচ্ছে। গতকাল শনিবার রুলকার্ভ অনুযায়ী পানি রয়েছে ৭৫.৩২ (মীনস সি লেভেল) আর পানি থাকার কথা ৮১.৮৪ (মীনস সি লেভেল)। পিডিবি চট্টগ্রাম অফিস সূত্র জানায়, গত সোমবার দুটি ইউনিট চালুর মাধ্যমে মোট ৬৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। বৃষ্টিপাত নিয়মিত হলে ধীরে ধীরে বাকি ইউনিটগুলো চালুর মাধ্যমে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে। বুধবারও কাপ্তাইয়ের ৫টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে।
চট্টগ্রামে বর্ষা মৌসুমে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে বুধবার পর্যন্ত ১ হাজার ৪৪১ মেগাওয়াট। কিন্তু চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ১ হাজার ১৫৬ মেগাওয়াট। ২৮৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যে ঘাটতি রয়েছে তা লোডশেডিং করা হচ্ছে। তবে ঈদুল আজহার সময়ে বিদ্যুৎ খাটতি হবে না বলে মনে করছেন বিদ্যুৎ বিভাগ। এর প্রধান কারণ হিসেবে রয়েছে প্রাকৃতিক আবহাওয়া ও শহর ছেড়ে বেশির ভাগই মানুষ গ্রামমুখী হবে। ফলে শহরে বিদ্যুতের সেভাবে চাপ পড়বে না এবং বৃষ্টিপাত হলে বিদ্যুতের চাহিদাও কমে যাবে। ফলে আগে যে সংকট ছিল তা আর থাকবে না।
কাপ্তাই হাইড্রোলিক পাওয়ার প্লান্টের পাঁচটি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার ক্ষমতা রয়েছে ২৩০ মেগাওয়াট। কিন্তু এতদিন চালু ছিল মাত্র একটি ইউনিট। আর তা থেকে মাত্র ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছিল। পাশাপাশি রাউজান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি ইউনিটে ৩৬০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা থাকলেও গ্যাস স্বল্পতার কারণে উৎপাদন হচ্ছে ১০০ মেগাওয়াট।