রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন নিয়ে আমেজ তৈরি হয়েছিল। আবাসিক হলগুলোতে প্রার্থিতার পাশাপাশি প্যানেল ঘোষণাও করছেন অনেকে। তবে আমেজ থাকলেও কাটছে না সংকট। নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে পিছুটানে ছাত্রদল। নানা অভিযোগে অসন্তুষ্ট বামজোট ও ছাত্র অধিকার পরিষদ। এদিকে কোটা আন্দোলনে অচলাবস্থার দিকে যাচ্ছে ক্যাম্পাস। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। অনেকেরই প্রশ্ন, তবে কি আটকে যাচ্ছে রাকসু নির্বাচন?
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, দ্রুতই প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেব এবং নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তা ছাড়া চলমান আন্দোলনের সমাধানেও কাজ চলছে। বাতিল হওয়া পোষ্য কোটা ফিরে আসার সুযোগ নেই।
১৯ আগস্ট প্রধান নির্বাচন কমিশনার ২০ আগস্ট থেকে মনোনয়ন বিতরণ শুরুর ঘোষণা দেন। তবে সেদিনই মধ্যরাতে এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে অনিবার্য কারণ দেখিয়ে মনোনয়ন বিতরণ স্থগিত করা হয়। এ ঘটনায় তাৎক্ষণাৎ প্রতিবাদ জানায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির। ২০ আগস্ট তফসিল আংশিক পরিবর্তন করে ২৪ আগস্ট থেকে মনোনয়ন বিতরণের ঘোষণা দেয় কমিশন। তবে সেদিন রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক আমজাদ হোসেনকে সদস্য মনোনীত করে বাংলাদেশ কর্ম কমিশন। ফলে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট অনেকেই। এ ব্যাপারে রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, পিএসসির সদস্য হওয়ায় এ মুহূর্তে আমি আর পদে নেই। তাই আর কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।
নির্বাচন কমিশনের সদস্য ড. এনামুল হক বলেন, উপাচার্য নতুন প্রধান কমিশন নিয়োগের কথা বলেছেন। আমরা সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। যদি জটিল কিছু না হয়, তবে ঠিক সময়ে নির্বাচন হবে।
হামলাকারীও ভোটার, চূড়ান্ত ভোটার তালিকা নিয়ে সমালোচনা
এদিকে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বামজোট ও ছাত্র অধিকার পরিষদসহ অনেকে। নেতারা বলছেন, ত্রুটিপূর্ণ ভোটার তালিকা কমিশনের সমন্বয়হীনতা ও ব্যর্থতার বহিঃপ্রকাশ।
তালিকা পর্যালোচনায় দেখা গেছে, জুলাই গণ অভ্যুত্থান শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ থাকা শিক্ষার্থীও তালিকায় রয়েছে।
গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের অন্যতম মুখপাত্র ফুয়াদ রাতুল বলেন, নির্বাচন নিয়ে প্রশাসনের একের পর এক দায়িত্বহীনতা দেখতে পাচ্ছি। তারা ত্রুটিপূর্ণ ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে। তালিকায় ভোটারের ছবি নেই। জুলাইবিরোধীরাও তালিকায় আছে। এতে ভোট কারচুপির শঙ্কা থাকেই।
ক্ষোভ প্রকাশ করে শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি মেহেদী মারুফ বলেন, ভোট কেন্দ্র এখনো একাডেমিক ভবনে স্থানান্তর হয়নি। ফলে আমরা কমিশনের ওপর পূর্ণ আস্থা রাখতে পারছি না।
কমিশনের সদস্য ড. আবদুল হান্নান বলেন, যদি কেউ অভিযোগ দেয়, তাহলে তালিকা থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হবে। চূড়ান্ত হয়েছে মানে সংশোধন অযোগ্য নয়। বিশেষ প্রশ্ন থাকলে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে জানতে বলেন তিনি।
পোষ্য কোটা নিয়ে ফের অচলাবস্থা ক্যাম্পাসে অন্যদিকে পোষ্য কোটা নিয়ে চলমান আন্দোলনে ক্যাম্পাস ফের অচলাবস্থার দিকে যাচ্ছে। কোটাকে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে তা ফিরে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক-কর্মচারী-কর্মকর্তারা। ২৪ আগস্টের মধ্যে দাবি না মানলে লাগাতার কর্মবিরতিসহ সর্বাত্মক ধর্মঘট পালনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।