দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট। বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠী পান করছেন খাল ও পুকুরের পানি। লবণাক্ততা বাড়ায় খাবার পানির সংকট অতীতের তুলনায় আরও তীব্র হয়েছে। এবারের শুকনো মৌসুমে এ সংকট আরও বাড়তে পারে। এ জন্য চায়নার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি) সহায়তায় জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে উপকূলীয় অঞ্চলে সোলার ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের পাইলটিং শুরু হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন সংস্থার জরিপ অনুযায়ী দেশের ৪১ শতাংশ মানুষ এখনো বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভুগছেন। উপকূলীয় ১৯ জেলা, পার্বত্য অঞ্চলের চার জেলা, চরাঞ্চল, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার বস্তিবাসী ও প্রান্তি জনগোষ্ঠী যারা বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভুগছেন তাদের জন্য এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার মাঝামাঝি আবাদচণ্ডীপুর গ্রামে স্থাপন করা হয়েছে এই সোলার ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট। যার মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ১ হাজার ৫০০ লিটার পানি শোধন করা সম্ভব। যা হবে আর্সেনিক জীবাণুমুক্ত বিশুদ্ধ সুপেয় পানি।
প্রকল্পটি সফল হলে উপকূলের ১৯টি জেলায় স্থাপন করা হবে। বস্তি এলাকা কিংবা চরাঞ্চলসহ যে কোনো স্থানে স্থাপন করা সম্ভব। এই প্ল্যান্ট স্থানান্তর করাও সহজ। এই মেশিনটি চলবে সোলার বিদ্যুতের সাহায্যে। ফলে খরচ একেবারেই কম।
প্রকল্পের কনসালট্যান্ট অভিশেক পাল বলেন, এটির সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, যে কোনো ময়লা পানি পরিশোধন করে বিশুদ্ধ খাবার পানিতে রূপান্তর করতে পারে খুবই কম সময়ে। এটির ভিতরের কিট ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ স্থানীয়ভাবে বাংলাদেশেও তৈরি করা হয়েছে। শুধু প্রযুক্তিটা চায়নার। ফলে এটি স্থানীয় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিয়ে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট মেটানো সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।