বৃহস্পতিবার, ২ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

এক দিনের জায়গায় কেটে গেছে দেড় বছর!

এসেনশিয়াল ড্রাগস লিমিটেড যেতে পারেনি উৎপাদনে

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকীতেও চালু হচ্ছে না প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভিত্তিক প্রকল্প গোপালগঞ্জ ইডিসিএল তৃতীয় প্রকল্প। ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর জননেত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। কথা ছিল প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পরদিন ২ নভেম্বর থেকে উৎপাদনে যাবে প্রকল্পের একটি ইউনিট। উৎপাদন হবে পেনিসিলিন জাতীয় ১১ প্রকারের ওষুধ। কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে উদ্বোধনের প্রায় দেড় বছর পার হলেও উৎপাদনে যেতে পারেনি এসেনশিয়াল ড্রাগস লিমিটেডের গোপালগঞ্জ প্রকল্পের পেনিসিলিন ইউনিট। উৎপাদন না হলেও এখানে আছেন ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার, উৎপাদন ব্যবস্থাপক, প্রডাক্ট ডেভেলপমেন্ট ব্যবস্থাপক, মাননিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপক, প্রকৌশলীসহ অনেক কর্মকর্তা। অভিযোগ আছে, কারখানাটি চালু না হলেও উদ্বোধন দেখিয়ে কমপক্ষে ৮০০ লোককে অর্থের বিনিময়ে চাকরি দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সিবিএ নেতাদের যোগসাজশে একজন শ্রমিকের নিয়োগে ৬ লাখ, জুনিয়র অফিসার পদে নেওয়া হয়েছে ১২ লাখ করে। এ ছাড়া মেশিনারিজ ইতালি ও জার্মান থেকে আমদানির কথা থাকলেও তা না করে ভারত থেকে নিম্নমানের মেশিনারিজ আনা হয়েছে। প্রকল্প চালু হয়নি, কিন্তু গ্যারান্টি ও ওয়ারেন্টি সময় শেষে হয়ে গেছে এসব মেশিনারিজের। মেশিনারিজ ক্রয় থেকে প্রায় ত্রিশ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। কারখানার উৎপাদন শুরু না হলেও  ২১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী শুধু হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেই বেতন-ভাতা নিচ্ছেন। তারা সময় কাটাচ্ছেন খোশগল্প করে। এসেনশিয়াল ড্রাগস লিমিটেডের গোপালগঞ্জ প্রকল্পের কয়েক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, পেনিসিলিন ইউনিটটি এখনো উৎপাদনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি। স্থাপন সম্পন্ন হয়নি বিদেশ থেকে আমদানি করা মেশিনারিজ। বসানো হয়নি লিফট। এ ছাড়া ওই প্রকল্পের আয়রন ট্যাবলেট উৎপাদন ইউনিট, আই ভি ফ্লুইড উৎপাদন ইউনিট ও জন্ম বিরতিকরণ পিল উৎপাদন ইউনিটের অবকাঠামোগত কাজ এখনো শেষ হয়নি। শতাধিক কর্মকর্তা, কর্মচারী ও টেকনিশিয়ান প্রকল্পটিতে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন। তবে কাজের গতি দেখে মনে হয় ২০২১ সালের আগে উৎপাদনে আসতে পারবে না এশিয়া মহাদেশের বৃহৎ এই সরকারি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটির গোপালগঞ্জের প্রকল্প। অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পটিতে চারটি ইউনিট থাকবে। যাতে তৈরি হবে যথাক্রমে পেনিসিলিন, আই ভি ফ্লুইড ইনজেকশন, জন্ম বিরতিকরণ পিল ও আয়রন ট্যাবলেট। এ প্রকল্প চালু হলে এখানে ইডিসিএলের বিভিন্ন প্রকল্প থেকে ৭৭৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত করা হবে। নতুন নিয়োগ পাবেন ৭৭৮ জন। গোপালগঞ্জ প্রকল্পের ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার মনোরঞ্জন সরকার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘পেনিসিলিন ইউনিটটি চালুর জন্য প্রস্তুত আছে। ওষুধ প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র পেলেই চালু করা যাবে। বাকি ইউনিটগুলোও দ্রুত চালুর চেষ্টা চলছে।

সর্বশেষ খবর