বুধবার, ৭ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

করোনা রোগীপ্রতি বরাদ্দ ৩০০ খাবার পায় ৭০-৮০ টাকার

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

করোনা রোগীপ্রতি বরাদ্দ ৩০০ খাবার পায় ৭০-৮০ টাকার

একজন করোনা রোগীর প্রতিদিনের খাবারের জন্য ৩০০ টাকা করে সরকারি বরাদ্দ থাকলেও ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের তিন বেলায় খাবার দেওয়া হয় মাত্র ৭০-৮০ টাকার এমন অভিযোগ করেছেন রোগীর স্বজনরা। পাশাপাশি বিভিন্ন ফলমূল দেওয়ার কথা থাকলেও তা পাচ্ছেন না রোগীরা। ফলে অধিকাংশ রোগীকে বাড়ির খাবারের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। খাবার সরবরাহের জন্য করোনা ইউনিটে দর্শনার্থীর আনাগোনায় সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকিও বাড়ছে। জানা যায়, ঠাকুরগাঁও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ১৭৪ জন করোনা রোগী। তাদের সকালের নাস্তায় দেওয়া হয় একটি পাঁচ টাকা দামের পাউরুটি, একটি ডিম ও ৪-৫ টাকা দামের কলা। দুপুরের খাবারে ভাতের সঙ্গে দেওয়া হয় ডাল, একটি ডিম অথবা এক টুকরো মাছ। রাতের খাবারে ভাতের সঙ্গে থাকেছে এক টুকরো মাছ অথবা একটি ডিম। বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী তিন বেলার খাবারের দাম হিসাব করলে ৭০-৮০ টাকার বেশি হয় না। তাছাড়া তিন বেলা খাবারের সঙ্গে রোগীদের নিয়মিত ফলমূল দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হচ্ছে না। আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসা নেওয়া আবু তালেব বলেন, ‘সকালে নাস্তায় একটা কলা দিয়েছিল সেটি খাবার উপযোগী ছিল না। আর তরকারির অবস্থা দেখলে খাওয়ার ইচ্ছা নষ্ট হয়ে যায়।’ তিনি বলেন, ‘সরকারি বরাদ্দের টাকায় নিয়ম অনুযায়ী করোনা রোগীকে নিয়মিত ফলমূল, দুধ, হরলিক্স দেওয়ার কথা কিন্তু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরা তা পাচ্ছেন না।’ সদর হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন সবুর উদ্দিন জানান, তিনি এই ইউনিটে কয়েক দিন ধরে এখানে চিকিৎসাধীন আছেন। এক দিনের জন্যও হাসপাতালের দেওয়া খাবার খেতে পারেননি। সকালে নাস্তা হিসেবে দেওয়া পাউরুটিও খাবার মতো নয়। এ ছাড়া কোনো দিন ফলমূল পাননি। বাধ্য হয়ে বাড়ি থেকে খাবার এনে খেতে হচ্ছে। সদর হাসপাতালের রাঁধুনী বলেন, ‘হাসপাতালে খাদ্য সরবরাহকারী যেভাবে খাবার সরবরাহ করছেন সেভাবে রান্না করে দেওয়া হচ্ছে।

 অনেক রোগী হাসপাতালের খাবার খেতে আগ্রহ দেখান না, তাই তাদের খাবার দেওয়া হয় না। হাসপাতালের খাদ্য সরবরাহকারী ঠিকাদার নিপুণ মোহন্ত বলেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী সব ধরনের খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করছি। করোনা রোগীকে তালিকা অনুযায়ী খাবার বিতরণের দায়িত্ব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।’ ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রাকিবুল ইসলাম চয়ন বলেন, ‘তালিকা অনুযায়ী চিকিৎসাধীন করোনা রোগীদের সব ধরনের খাদ্য পাওয়ার কথা। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. নাদিরুল ইসলাম চপল বলেন, ‘ঠিকাদার যেভাবে খাবার সরবরাহ করছেন সেভাবেই করোনা রোগীকে বিতরণ করা হচ্ছে। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।’

সর্বশেষ খবর