কনকনে ঠান্ডা। সঙ্গে বইছে হিমেল বাতাস। এমন আবহাওয়ায় গত এক সপ্তাহ ধরে শীতে জুবুথুবু হয়ে পড়েছেন উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁ। ঠান্ডার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত রোগ। নওগাঁয় গত কয়েক দিন ধরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। উত্তরের হিম বাতাসের কারণে কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে। সন্ধ্যা নামার পর থেকে ঘনকুয়াশায় চারদিকে ছেয়ে যায়। দুপুর ১২টার আগে সূর্যের দেখা মিলছে না। দিনমজুররা শীতে মাঠে কাজ করতে পারছেন না। একদিকে গরম কাপড়ের অভাব, অন্যদিকে কাজে বের হতে না পারায় তাঁদের দুর্ভোগের শেষ নেই। তবে গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে লোকজনের ভিড় বাড়ছে। ফুটপাতেও গরম কাপড় বিক্রি হচ্ছে সমানতালে। জানা গেছে, চলতি মাসের প্রথম ১৯ দিনে ঠান্ডাজনিত রোগে ৩ হাজার ৭৯৬ জন হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৩ হাজার ৪০ জন এবং নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৭৫৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। গত এক সপ্তাহে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৩২০ এবং ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮৩৫ জন। এদের বেশির ভাগই শিশু ও বয়স্ক। চিকিৎসকরা বলছেন, প্রচন্ড শীতের কারণে এসব রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। গত এক সপ্তাহে ২৩৫ জন রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে ১২২ জন শিশু। এছাড়া নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৯০ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ৫৮ জন শিশু। সদর আধুনিক হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স ফারহানা আক্তার বলেন, শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকায় অনেক শিশুকে মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এমনকি এক বেডে ২-৩ জনকে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে হাসপাতালে ৪০টি বেডের বিপরীতে ৬১ জন শিশু ভর্তি রয়েছে। এদের বেশিরভাগই ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। তাদের সেবা দিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। প্রচন্ড শীতের কারণে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগী বেশি ভর্তি হচ্ছে জানিয়ে নওগাঁ সদর হাসপাতালের শিশু চিকিৎসক উজ্জ্বল হোসেন বলেন, হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ পর্যাপ্ত রয়েছে। এছাড়া স্যালাইনসহ বিভিন্ন ওষুধের সরবরাহ পর্যাপ্ত আছে। রোগীর চাপ সামাল দিতে আমরা চিকিৎসাকর্মীরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।