রবিবার, ১৩ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

হিলিতে সর্দিজ্বর ডায়রিয়া

হিলি প্রতিনিধি

হিলিতে সর্দিজ্বর ডায়রিয়া

দিনাজপুরের হিলিতে দিনের বেলা গরম অনুভূত হলেও রাতে গায়ে শীতবস্ত্র দিতে হচ্ছে। আবহাওয়া পরিবর্তন জনিত কারণে ডায়রিয়া, জ্বর সর্দিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। সবচেয়ে  বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন বয়স্ক ও শিশুরা। রোগীদের বাড়তি ভিড়ে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন খাবার গ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসক। এবারের শীত কয়েকদিন আগে বিদায় নিলেও হিলিতে এখনো রাতে শীত অনুভূত হচ্ছে। আবার দিনের বেলা গরম বিরাজ করছে। আবহাওয়ার এমন পরিবর্তন জনিত কারণে হঠাৎ করেই ডায়রিয়া, জ্বর সর্দি কাশিসহ রোগীর সংখ্যা। শিশুরা এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিচ্ছে, শরীর দুর্বল হয়ে অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। ঘন ঘন পাতলা পায়খানা ও বমি হওয়ায় শরীর দুর্বল হয়ে পড়ায় চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে ভিড় করছেন।  রোগীদের বাড়তি চাপের কারণে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা। অনেকে ভর্তি হলেও কেউ কেউ আউটডোরে চিকিৎসক দেখিয়ে নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আল্পনা খাতুন বলেন, হিলিতে গত কয়েকদিন ধরে দিনে প্রচণ্ড গরম আর রাতে ঠাণ্ডা। দিনের বেলা ফ্যান চালাতে হচ্ছে আর রাতের বেলা গায়ে গরম কাপড় দিতে হচ্ছে। এই গরম-ঠাণ্ডা আবহাওয়ার কারণে আমার বাচ্চার গত ৫ দিন ধরে পাতলা পায়খানা হচ্ছিল। স্থানীয় দোকান থেকে স্যালাইন নিয়ে খাওয়াইছি। কিন্তু গতকাল থেকে একেবারে পানির মতো পাতলা পায়খানা হচ্ছিল। আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।  বাধ্য হয়ে বাচ্চাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি চিকিৎসার জন্য। আসার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকরা বাচ্চাকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিচ্ছে।

হাসপাতালে অন্য শিশুর মা রিপা আকতার বলেন, আমার বাচ্চা গত তিন দিন ধরে পাতলা পায়খানা করছে কোনো কিছুই খাচ্ছে না যার কারণে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। এখানে ডাক্তাররা হাসপাতালে ভর্তি করে এখন চিকিৎসা দিচ্ছে। ওষুধ খাওয়ালে কমে আবার বন্ধ করলে পায়খানা বাড়ে এমন অবস্থায় দাঁড়িয়েছে। শিশুকে নিয়ে আসা শাপলা খাতুন বলেন, গত পাঁচ দিন ধরে আমার  ছেলের জ্বর সঙ্গে বমি করতে থাকে আর গতকাল  থেকে শুরু হয় পাতলা পায়খানা। কোনো কিছুই মুখে নিচ্ছিল না, ছেলের খেলাধুলা হাসি সবকিছু বন্ধ হয়ে যায়। গতকাল রাতেই তাকে হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করেছি।  হাসপাতালে আসা গৃহবধূ ইয়াসমিন আকতার বলেন, গতকাল রাতে হঠাৎ করে  পেটে সমস্যা দেখা দেয়। হঠাৎ করে গ্যাসফর্ম করায় বমি, পাতলা পায়খানা শুরু হয়, অবস্থা খারাপ হওয়ায় গ্রামের ওষুধের দোকান থেকে স্যালাইন ট্যাবলেট কিনে খেয়েছি কিন্তু কোনটাতেই  কোনো কাজ হচ্ছেনা। তাই সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে চলে এসেছি চিকিৎসা নেওয়ার জন্য। হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক  মেডিকেল অফিসার ডা. সজল কান্তি রায় বলেন,  রোগীর সংখ্যা আগের তুলনায় বেড়েছে বিশেষ করে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা হঠাৎ করেই বেশ বেড়ে  গেছে। সেটার একটা কারণ হতে পারে আবহাওয়া পরিবর্তন, এখন ধুলাবালি বেশি হচ্ছে পার্সোনাল হাইজিনকেই মেইনটেন্স করছে না কেউ যার কারণে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। পাশাপাশি  জ্বর শর্দী কাশির রোগীর সংখ্যা অনেকটা বাড়ছে। পার্সোনাল হাইজিন মেইনটেন্স করা যেখানে-সেখানে খাবার না  খেলেও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন খাবার গ্রহণ করা। তবে বাড়ির তৈরি খাবার খাওয়া সবচেয়ে ভালো তাই এটি গ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছি আমরা।

সর্বশেষ খবর