রবিবার, ১ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

বান্দরবানে ডায়রিয়ার প্রকোপ

বান্দরবান প্রতিনিধি

বান্দরবানে ডায়রিয়ার প্রকোপ

বান্দরবানের পাহাড়ি এলাকাগুলোতে পানীয় জল সংকটের কারণে অন্যান্য পেটের পীড়া ও ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে।

এর মধ্যে সবচেয়ে নাজুক অবস্থা লামা উপজেলার রূপসী পাড়া এলাকায়। এখানে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এই মৃত্যুর বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও রূপসী পারা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার লংক্রাত ম্রো জানিয়েছেন, ম্যালেরিয়ায় ভুগে তার এলাকায় একজন ম্রো নাগরিকের মৃত্যু ঘটেছে। তিনি জানান, অবস্থা নাজুক হওয়ায় আলীকদম সেনা জোনের পক্ষ থেকে রূপসী পাড়ায় একটি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। লামা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাইনুদ্দিন মাজেদ চৌধুরী জানান, উপজেলার দুর্গম এলাকাগুলোতে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ার খবর তারা পেয়েছেন। তিনি জানান, গত কয়েকদিনে উপজেলা           হাসপাতালগুলোতে যেসব রোগী আসছেন তাদের মধ্যে অনেকেরই ডায়রিয়া রয়েছে। গতকাল ডায়রিয়া আক্রান্ত ২০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

এদিকে সেনাবাহিনীর অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন নুরুজ্জামান তূর্য জানান, মিনতুই পাড়া ও পমপং পাড়া ১২৫ জনকে তারা চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন। এর মধ্যে ৩০ জন শিশু, ৪৬ জন নারী এবং ৩৬ জন পুরুষ রয়েছেন। তাদের অধিকাংশেরই ডায়রিয়ার লক্ষণ রয়েছে। তাদের মধ্য থেকে ২০ জনকে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থানান্তর করা হয়েছে। এদিকে বান্দরবান সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে ডায়রিয়া আক্রান্ত ২২ জন রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের রেকর্ড অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়া রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১০৭। গত চার মাসে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ২ হাজার ৩৯ জনকে ডায়রিয়া রোগের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। এ হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগী আমিনুল হক বলেন, দুদিন আগে আমি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হই। পরিবারের সদস্যরা আমাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। ভর্তির পর দেখতে পাই অসংখ্য নারী-পুরুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। শয্যা সংকটও প্রকট। আরেক রোগী রোজ চাকমা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে তিন দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। এখন সুস্থতার পথে। আরেক রোগীর স্বজন আবুল কালাম বলেন, গতকাল ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভোরে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আমার স্ত্রী। চিকিৎসক বলেছেন, দুই-তিনদিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে যাবেন।

সর্বশেষ খবর