সোমবার, ৩০ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

পাহাড়ে ডায়রিয়ার প্রকোপ

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

পাহাড়ে ডায়রিয়ার প্রকোপ

পাহাড়ে হঠাৎ দেখা দিয়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। এরই মধ্যে আক্রান্ত হয়েছে শতাধিক। শিশুদের পাশাপাশি বাদ পড়েনি পাপ্ত বয়স্ক নারী ও পুরুষ। রাঙামাটি দুর্গম জুরাছড়ি উপজেলার মৈদং ইউনিয়নের কয়েকটি পাহাড়ি পল্লীর বাসিন্দা এখন ডায়রিয়া আক্রান্ত। যদিও কাজ করছে মেডিকেল টিম। কিন্তু সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এ ঘটনায় উদ্বেগ উৎণ্ঠা বিরাজ করছে পাহাড়জুড়ে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, পাহাড়বাসী ছড়া, ঝরনা ও নদীর অস্বাস্থ্যকর পানি পান করার কারণে ডায়রিয়া রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটির জুরাছড়ি উপজেলার মৈদং ইউনিয়ন আমতলা গ্রাম। এ গ্রামে প্রায় ৪৫টি পরিবার। এ অঞ্চলের মানুষকে খাবার ও ব্যবহারের পানি সংগ্রহ করতে হয়, পাহাড়ি ছড়া, ঝরনা কিংবা হ্রদ থেকে। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে ছড়া ও ঝরনার পানি শুকিয়ে গেলে তাদের বাধ্য হয়ে সংগ্রহ করতে হয় হ্রদের পানি। আর হ্রদের অস্বাস্থ্যকর পানি পান করে এরই মধ্যে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে। ডায়রিয়াও ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামজুড়ে। সম্প্রতি জুরাছড়ি উপজেলার মৈদং ইউনিয়নের আমতলা গ্রামে আট বছরের শিশু রাঙাবি চাকমা ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গ্রামবাসীর মধ্যে। খবর পেয়ে দ্রুত ওই গ্রামে যায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের একটি বিশেষ মেডিকেল দল। আমতলা বাদলহাটছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মঙ্গল চাকমা বলেন, সম্প্রতি পাহাড়ে বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ার পর ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। শুনেছি এরই মধ্যে ৭০ জনকে মেডিকেল চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বাকিরা সুস্থ। স্থানীয় কারবারি ও ওয়ার্ড সদস্য রহিনী কুমার চাকমা বলেন, ডায়রিয়ার পাশাপাশি জ্বরও রয়েছে অনেকের। এলাকাবাসী দুঃচিন্তায় রয়েছেন। যোগাযোগব্যবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে উপজেলায় রোগীদের আনা সম্ভব হচ্ছে না। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশু অমর শান্তি চাকমার মা সঞ্জারিকা চাকমা বলেন, ডায়রিয়া আক্রান্ত হওয়ার পর শিশুটা একেবারে দুর্বল হয়ে পড়েছে। এখন কিছুটা ভালো। তবে  চিন্তা বৃদ্ধ শ্বশুর-শাশুড়িকে নিয়ে। তারাও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। পরিবারে তিন সদস্য আক্রান্ত হওয়ায় দেখাশোনা করার লোক একেবারে নেই। মৈদং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাধনা নন্দ চাকমা বলেন, এ অঞ্চলে খাবার পানির খুবই সমস্যা। দুর্গম গ্রামের মানুষগুলো শুষ্ক মৌসুমে খাবার পানি সংকটে পড়ে। যোগাযোগব্যবস্থা ভালো না হওয়ার কারণে একেবারে সুবিধাবঞ্চিত গ্রামবাসী। এখন আবার ডায়রিয়ায় দেখা দিয়েছে। সরকারি সহায়তা না পেলে তাদের ভাগ্যের পরির্বতন হবে না। স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টিম দ্রুত পর্যাপ্ত ওষুধসহ পাড়াবাসীর পাশে দাঁড়ানো দরকার। রাঙামাটি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সিভিল সার্জন বিপাশ খীসা বলেন, ডায়রিয়া আগের চেয়ে এখন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসছে। স্বাস্থ্য বিভাগের একটি দল কাজ করছে জুরাছড়িতে। মৃত্যুর সংখ্যা নেই। আক্রান্তরা আগের চেয়ে সুস্থ আছেন। প্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর