শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

নিম্নমানের ওষুধের রমরমা ব্যবসা

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

নিম্নমানের ওষুধের রমরমা ব্যবসা

গাইবান্ধায় নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে লাইসেন্সবিহীন ওষুধের দোকানগুলোতে চলছে নিম্নমানের ওষুধের রমরমা ব্যবসা। জেলায় ওষুধের দোকান আছে ৬ হাজারের মতো কিন্তু এর মধ্যে লাইসেন্স আছে মাত্র ১ হাজার ৩০০টির। বাকি ৭৮ ভাগ দোকানের লাইসেন্স যেমন নেই তেমনি নেই প্রশিক্ষিত ফার্মাসিস্ট। জেলা ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর লাইসেন্সবিহীন ওষুধের দোকানের কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যা যেমন জানাতে পারেনি তেমনি নিম্নমানের ওষুধের বিষয়েও তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। স্থানীয়রা জানান, শহর গ্রাম পাড়া মহল্লায় ওষুধের দোকান দেওয়ার হিড়িক পড়ে গেছে। কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা ব্যবসায়ীরা করছেন না। প্রশিক্ষিত ফার্মাসিস্ট না থাকায় তারা লাইসেন্সের শর্তও পূরণ করতে পারছেন না। প্রকাশ্যে এসব ব্যবসা চললেও তা নিয়ন্ত্রণে সরকারি কোনো পদক্ষেপও চোখে পড়ে না। ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ১ হাজার ৩০০টি ফার্মেসি লাইসেন্স করেছিল তাদের মধ্যে আবার ৪৪৮টি লাইসেন্স নবায়নও করেনি। এদের মধ্যে ১০ থেকে এক বছর মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্সধারীরা রয়েছেন। জেলা কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সহসভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, গাইবান্ধা শহরসহ সাত উপজেলায় মোট ওষুধের দোকান আছে ৬ হাজারের কাছাকাছি। এর মধ্যে মাত্র ৫০০টি ফার্মেসি সমিতির সদস্য। লাইসেন্সবিহীন ফার্মেসিগুলোকে লাইসেন্স করার অনুরোধ জানালেও তারা গুরুত্ব দেন না। ফার্মেসির জন্য সনদপ্রাপ্ত ফার্মাসিস্টের প্রয়োজন। গাইবান্ধায় মোট সনদধারী ফার্মাসিস্ট আছেন ১ হাজার ২০০ জন। অথচ ফার্মেসি চলছে ৬ হাজার। উপজেলা ও গ্রাম পর্যায়ে হাতুড়ে চিকিৎসক ও ওষুধের দোকানিরা নিম্নমানের ওষুধ  রোগীদের বেশি দিয়ে থাকেন।

কম দামে কিনে বেশি দামে এসব ওষুধ বিক্রি করে তারা লাভবান হলেও রোগীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন বলে অভিযোগ করেন। জেলা ঔষধ তত্ত্বাবধায়ক অফিসের সহকারী পরিচালক শিকদার কামরুল ইসলাম বলেন, লাইসেন্সবিহীন ফার্মেসিগুলোকে লাইসেন্স করতে আমরা সচেতন করছি। ওষুধ কোম্পানিগুলোকে এসব দোকানে ওষুধ সরবরাহ না করতেও আমরা পত্র দিয়েছি। কম জনবল নিয়ে সাধ্যমতো তদারকি করছি। তবে নিম্নমানের ওষুধ নিয়ে চিকিৎসক, ব্যবসায়ী বা অন্য কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ জানায়নি। গাইবান্ধা সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি জহুরুল কাইয়ুম বলেন, প্রতিটি ফার্মেসিতেই প্রশিক্ষিত ফার্মাসিস্ট থাকার কথা কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা নেই। এর সঙ্গে আবার লাইসেন্সবিহীন ফার্মেসি অবাধে ব্যবসা করে যাচ্ছে। অথচ এসব যেন দেখভাল করার দায়িত্ব কারও নেই। মাঝে মধ্যে অভিযান চললেও তা কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। রোগীরা যেন সঠিক এবং ভালো মানের ওষুধ কিনতে পারে সেজন্য প্রশাসনিকভাবে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

 

সর্বশেষ খবর