শুক্রবার, ৪ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

সোলার পাতকুয়ায় ভাগ্য ফিরেছে কৃষকের

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি

সোলার পাতকুয়ায় ভাগ্য ফিরেছে কৃষকের

সৈয়দপুরে সৌর বিদ্যুৎচালিত পাতকুয়া

সৈয়দপুরে বরেন্দ্র বহুমুখী প্রকল্পের সোলার পাতকুয়ার পানি ভাগ্য বদল করে দিয়েছে দুই শতাধিক  কৃষকের। এসব কৃষক সোলার বিদ্যুৎ ব্যবহার করে পাতকুয়ার মাধ্যমে ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে সারা বছর ফসল ফলাচ্ছেন। পাঁচ বছর আগেও যেসব জমি পতিত থাকত সেসব জমিতে এখন ফুলকপি, আলু, টমেটো, সিম ও মরিচ চাষ হচ্ছে। বদলে গেছে কৃষকদের আর্থিক অবস্থা। ছনের বাড়ি আধাপাকা হয়েছে। খেতমজুরদের কাজ মিলছে সারা বছর। উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বড়দহ গ্রামের কৃষক আতিয়ার, কেশবচন্দ্র, সুবোল চন্দ্র ও দেবেন রায়া জানান, এই গ্রামের বেলে-দোঁআশ মাটিতে আগে তেমন ফসল ফলত না। সমতল ভূমি হলেও উঁচু হওয়ায় কোনো সময়েই জমিতে পানি আটকানো যায়নি। পানির অভাবে ফসল ফলানো দূরূহ ছিল। বর্তমান সরকারের আমলে সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর বদৌলতে গ্রামের চারটি স্থানে চারটি সোলার পাতকুয়া খনন করা হয়। সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে ১২৮ ফুট নিচ থেকে তোলা হচ্ছে পানি। এ সব কুয়া নির্মাণে সরকারের ব্যয় হয়েছে প্রায় ১ কোটি ২২ লাখ টাকা। কৃষকের সুবিধামতো স্থানে তৈরি করা পাতকুয়া থেকে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহের ফলে সারা বছর চাষাবাদ করা যাচ্ছে। শীতকালে চাষ হচ্ছে ফুলকপি, আলু, সিম, টমেটো। এসব ফসল তোলা শেষ হলে একই জমিতে মরিচ ও ভুট্টার আবাদ করা হবে। তাদের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে প্রায় ২০০ একর জমিতে ফুলকপি চাষ করা হয়েছে। পানির নিশ্চয়তা থাকায় ফলনও হবে ভালো। দাম মিলবে আশানুরূপ। উৎপাদন খরচও অনেক কম। এখন চাষিদের নেই তেমন আর্থিক অনটন। এলাকার কৃষি পরিবারগুলো অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ায় বসতবাড়ির চেহারাও পাল্টে গেছে। ছেলে-মেয়েরাও শিক্ষামুখী হয়েছে। বোতলাগাড়ী ইউপি সদস্য রবিউল ইসলাম বলেন, তার ওয়ার্ডের প্রায় ৯০ ভাগ মানুষ প্রান্তিক চাষি। ফসলি জমি বেলে-দোঁআশ আর উঁচু হওয়ায় আগে পানির অভাবে তেমন চাষাবাদ করা সম্ভব হতো না। বছরে অধিকাংশ সময় জমি গোচারণভূমি হয়ে থাকত। গ্রামের কৃষক পরিবারগুলো আর্থিক সংকটে দিন কাটাত। এখন সৌর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা থাকায় সোলার পাতকুয়া থেকে পানি উত্তোলন করে সুবিধামতো চাষিরা পানি ব্যবহার করে ফসল উৎপাদন করছেন। জমি পতিত না থাকায় মানুষের স্বচ্ছলতা এসেছে। তিনি আরও জানান, এখানে উৎপাদিত সবজি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে যায়। সরকারের সহায়তায় পানির সরবরাহ থাকায় কৃষকদের ব্যয় বলতে নেই। প্রতিবিঘা জমিতে পানি সরবরাহ পেতে খরচ হয় মাত্র ৫০ টাকা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহিনা বেগম বলেন, এবার প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাকসবজি চাষ হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর