বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

কাপ্তাই হ্রদে মাছ উৎপাদনে ভাটা, শঙ্কায় জেলেরা

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

কাপ্তাই হ্রদে মাছ উৎপাদনে ভাটা, শঙ্কায় জেলেরা

রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরছেন জেলেরা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ভরা মৌসুমেও কাপ্তাই হ্রদে মিলছে না পর্যাপ্ত মাছ। হ্রদে মাছ উৎপাদানে ভাটা পড়ায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বেড়েছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। শঙ্কায় রয়েছেন জেলেরা। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ কৃত্রিম জলধারা ও বাংলাদেশের প্রধান মিঠা পানির মৎস্য উৎপাদন ক্ষেত্র রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদ।

এক সময় এ হ্রদকে মৎস্য প্রজাতির বৈচিত্র্যময় ও সমৃদ্ধশালী জলভাণ্ডার বলা হতো। সম্প্রতি বছরগুলোতে কাপ্তাই হ্রদে দেখা দিয়েছে নানা সমস্যা। ড্রেজিংয়ের অভাব, গভীরতা হ্রাস, পানি ও পরিবেশ দূষণের কারণে বিলুপ্ত হয়ে গেছে হ্রদের অনেক প্রজাতির মাছ। হুমকির মুখে পড়েছে এ হ্রদের মৎস্য সম্পদ। রাঙামাটি মৎস্য উন্নয়ন অধিদফতর ও বিপণি কেন্দ্র (বিএফডিসি) বলছে, কাপ্তাই হ্রদের মৎস্য উৎপাদনে ভরা মৌসুম চলছে। তবুও জেলেদের জালে ধরা পরছে না মাছ। একটা সময় ঠিক এ মৌসুমে রাঙামাটি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছের স্তূপ থাকত। দম ফেলার সময় পেত না মৎস্য কর্মচারী ও ব্যবসায়ীরা। এ মৌসুমে মাছ আসছে প্রতিদিন গড়ে মাত্র ৭-৮ টন। ঘাটতি রয়েছে ৫০-৬০ টন। গত বছরের তুলনায় রাজস্ব আয়ও কম হচ্ছে। বেকার সময় পাড় করছেন কর্মচারী। রাঙামাটি মৎস্য ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, ২০২২ সালে শেষ দিকেও কাপ্তাই হ্রদের মাছ বাণিজ্যিকভাবে রপ্তানি হতো ২২ ট্রাকে। মাত্র তিন মাসে ব্যবধানে মাছ আহরণ কমে গেছে উল্লেখযোগ্য হারে। ঢাকায় মাছ নিয়ে এখন গাড়ি যায় মাত্র একটি। এ ধারা অব্যাহত থাকলে মাছ রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। ফিসারিঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী ইলিয়াস বলেন, কাপ্তাই হ্রদ ঘিরে জীবন ও জীবিকা প্রায় অর্ধলাখ মানুষের। এভাবে মাছ উৎপাদন কমলে না খেয়ে মরতে হবে। রাঙামাটি বিএফডিসির ব্যবস্থাপক কমান্ডার এম তৌহিদুল ইসলাম ট্যাজ বলেন, কাপ্তাই হ্রদের যেসব মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র ছিল সেগুলো প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। তাই মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষমতাও কমেছে। দীর্ঘদিনেও কাপ্তাই হ্রদের ড্রেজিং না হওয়ায় পলি জমে ভরাট হয়েছে তলদেশ। এতে মাছের সুষ্ঠু ও প্রাকৃতিক প্রজনন স্থান নষ্ট হয়েছে।

সর্বশেষ খবর