রবিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

ধানে চিটা, মাথায় হাত

উৎপাদন খরচ ওঠা নিয়ে কৃষকের শঙ্কা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ধানে চিটা, মাথায় হাত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ব্লাস্ট রোগে শুকিয়ে যাওয়া ধান খেত -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ব্রি ধান-২৮ জাতের বোরো ধানে দেখা দিয়েছে ব্লাস্ট রোগ। আক্রান্ত খেতের ধান পরিণত হচ্ছে চিটায়। ফসল হারানোর আশঙ্কায় পড়েছেন কৃষক। ঋণ পরিশোধের পাশাপাশি বছরের খাবার কীভাবে জুটবে, সেই দুশ্চিন্তায় কাটছে তাদের দিন। আখাউড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ধান খেতে ব্লাস্ট রোগ দেখা গেছে। আক্রান্ত জমি থেকে ধীরে ধীরে রোগ আশপাশের জমিতে ছড়িয়ে পড়ছে। উপজেলার ছোট কুড়িপাইকা, আনোয়ারপুর, কল্যাণপুর, দ্বীজয়পুর, ধাতুরপহেলা, বাউতলা, পৌর এলাকার খালাজোড়া, দুর্গাপুর এবং নারায়ণপুরের একাধিক কৃষক জানান, বোরো আবাদের শুরুর দিকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায়, রোগবালাইয়ের তেমন প্রাদুর্ভাব ছিল না। কৃষকরা ভালো ফলনের আশা করেছিলেন। শেষ মুহূর্তে ব্লাস্ট রোগের হানা দেওয়ায় ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষতির পরিমাণ কেমন হবে এখনো নির্ণয় করা যাচ্ছে না। বৈশাখের সোনালি ফসল রোগাক্রান্ত হওয়ায় হারিয়ে গেছে কৃষকদের হাসি। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর ইরি বোরো মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ৫ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ব্রি ধান-২৮ ও ২৯ আবাদ হয়েছে ১৫০০ হেক্টর জমিতে। খালাজোড়া এলাকার কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, এ মৌসুমে তার আবাদ করা আট বিঘা জমির মধ্যে ছয় বিঘায় ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে। জমিতে ধানের শীষ মরে সাদা হয়ে গেছে। দূর থেকে ধান পাকা দেখা গেলেও কাছে গিয়ে দেখা যায় শীষগুলো শুকিয়ে চিটা হয়ে মরে গেছে। দেড় লাখ টাকা ঋণ নিয়ে জমি আবাদ করেছিলাম। আশা ছিল ফসল তুলে ঋণ পরিশোধ করব। এখন আমার সব শেষ হয়ে গেল। কী করব বুঝতে পারছি না। পরিবার পরিজন নিয়ে খাব কী? আর কীভাবে ঋণ পরিশোধ করব? আরেক কৃষক আবদুল কাইয়ুম  জানান, ব্যাংক থেকে ২ লাখ টাকা লোন নিয়ে ১৪ বিঘা জমিতে ইরি বোরো আবাদ করেছিলাম। ফসল ঘরে তোলার সব প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছিল। এরই মধ্যে আট বিঘা জমি ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম বলেন, এ বছর আবহাওয়ার কিছু তারতম্য থাকায় বিশেষ করে দিনে তাপমাত্রা বেশি ও রাতে কম থাকায় এবং যে জমিতে আগাম আবাদ করেছে সেই জমিতে ব্লাস্ট আক্রমণ হয়েছে। এ পর্যন্ত উপজেলায় ২৬ হেক্টর জমিতে ব্লাস্ট রোগ ছড়িয়েছে। এটি প্রাকৃতিক বিপর্যয়। আমরা এখন কৃষকদের ব্রি-ধান ২৮ জাতের ধান চাষে নিরুৎসাহিত করছি। ভয়ের কোনো কারণ নেই। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে ইরি বোরোর বাম্পার ফলন আশা করা যায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর