গাজীপুরের শ্রীপুরে মীম (২২) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় লাশের পাশ থেকে তার স্বামীর মায়ের কাছে লেখা একটি চিঠি উদ্ধার করা হয়েছে। যাতে হত্যার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের মাওনা উত্তরপাড়া গ্রামের আবদুস সামাদের বাড়ির তিন তলার একটি কক্ষ থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। মীম সিরাজগঞ্জের বেলকুচি থানার মুলকান্দি ছোট বেড়া খারুয়া ছোটপাড়া গ্রামের ইউসুফ আলীর মেয়ে। তিনি টাঙ্গাইলের কালিহাতী থানার কালাই গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে আল আমিনের (২৪) স্ত্রী। আল আমিন শ্রীপুরের মাওনা গ্রামের স্বাদ টেক্সটাইল মিলে সিনিয়র হেলপার পদে চাকরি করেন। তিনি স্ত্রীকে নিয়ে ওই বাড়িতে বসবাস করতেন।
তবে মীমের হত্যাকারী স্বামী না অন্য কেউ তা উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।
বাড়িটির তত্ত্বাবধায়ক মো. মোস্তাকিম জানান, তিন মাস আগে মীম-আল আমিন দম্পতি ওই বাড়ির তিন তলার ৩৩ নম্বর রুমে ভাড়ায় ওঠেন। গতকাল দুপুর ১টার দিকে আল আমিনের সহকর্মী আরিফ বাসায় এসে জানান, আল আমিন তার স্ত্রী মীমকে হত্যা করে কক্ষে তালা মেরে গেছে। স্ত্রীকে হত্যার পর আল আমিন বিষয়টি কারখানায় গিয়ে সহকর্মী আরিফকে জানিয়েছেন। পরে তিনি বিষয়টি বাড়ির অন্যদের জানান এবং পুলিশে খবর দেন। শ্রীপুর থানার ওসি আকবর আলী খান জানান, আল আমিনের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। হত্যাকান্ডটি কে বা কারা ঘটাল তা উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহতের স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মায়ের কাছে লেখা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে- ‘মা আমারে মাফ কইরা দিয়ো। অনেক স্বপ্ন ছিল তোমারে কোনো দিন কষ্ট দিবো না। কিন্তু এমন একজন মানুষ তুমি আমারে আইনা দিছো, যার অত্যাচার থেকে বাঁচতে এই সিদ্ধান্ত নিলাম। তিলে তিলে মরার চাইতে একবারে মরে গেলাম। সবাই আমারে মাফ কইরা দিয়ো। সে আমারে কয়েক মাসের মধ্যে মানসিক রোগী বানাইয়া ফেলছে। পরিশেষে সবার জন্য দোয়া করে গেলাম। এমন বউ জানি কারও কপালে না জুটে।’ এরপর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বাকি টাকা পরিশোধের কথা জানিয়ে চিঠিটির পরিশেষে লেখা হয়েছে, ‘নিজেহ একাই মাইরা যাইতাম। কিন্তু এরে যদি বাঁচাইয়া রাইখা যাই, এ আরও অনেক মানুষের জীবন নষ্ট করবো, তাই মাইরা ফেললাম। অনেক স্বপ্ন ছিল রাসুল (সা.)-এর সব সুন্নাহগুলি আমার জীবনে বাস্তবায়িত করমু, কিন্তু পারলাম না!’ তার মায়ের মোবাইল নম্বর ও নিহত মীমের নানার মোবাইল নম্বর লিখে দেওয়া হয়েছে মায়ের কাছে লেখা চিঠিতে।
