হাওর বেষ্টিত মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকসহ জনবল সংকট ও নানা সমস্যায় ব্যাহত হচ্ছে সেবা। উপজেলার প্রায় ৩ লাখ মানুষের ভরসা, একমাত্র সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র এটি। অনেক দিন ধরে ব্যবহার না থাকায় এ হাসপাতালে পরীক্ষাগারের যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের অধিকাংশ পদই শূন্য। হাসপাতালে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা পদটিও শূন্য। দায়িত্বে আছেন একজন গাইনি বিশেষজ্ঞ। শূন্য অন্য পদের রয়েছেন জুনিয়র কনসালটেন্ট মেডিসিন, গাইনি অ্যান্ড অবস, অ্যানেসথেসিয়াসহ তিনজন। আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তার (আরএমও) পদটি বহুদিন ধরে খালি। এ ছাড়া মেডিকেল অফিসার পাঁচজন, ডেন্টাল সার্জন একজন, সহকারী সার্জন সাতজন। উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং টেংরা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দুজন চিকিৎসককে প্রেষণে এনে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। সামর্থ্যবান রোগীরা বাধ্য হয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে, নয়তো জেলা সদরে কোনো প্রাইভেট হাসপাতালে। চরম সমস্যায় পড়ছেন দরিদ্র, অসহায়সহ সাধারণ মানুষ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তিনটি অ্যাম্বুলেন্সের দুটিই নষ্ট। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে মেশিনটি অনেক দিন থেকেই অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। এক্স-রে পরিচালনার জন্য টেকনিশিয়ান পদ দীর্ঘদিন শূন্য। ব্যবহার না থাকায় অকেজো হয়ে পড়ছে এক্স-রে যন্ত্র। একই অবস্থা ল্যাবের। মেডিকেল টেকনোলজিস্টের দুটি পদ প্রায় বহুদিন ধরে শূন্য। যন্ত্রপাতি আছে, কিন্তু টেকনোলজিস্ট না থাকায় কোনো ধরনের প্যাথলজি পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ নেই। হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের (ওটি) দুটি টেবিলের একটি অকেজো। চিকিৎসক না থাকায় এই হাসপাতালে কোনো অস্ত্রোপচার হচ্ছে না। দন্ত বিভাগের যন্ত্রপাতি পুরোনো হয়ে গেছে। এ ছাড়া উপজেলার উত্তরভাগ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও পাঁচগাঁও উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে নেই কোনো ডাক্তার। মৌলভীবাজার সিভিল সার্জন মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, শুধু রাজনগর নয়, পুরো জেলার হাসপাতালগুলোতে ডাক্তার সংকট রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে লিখিতভাবে জানিয়েছি।