সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম সালনা-জয়দেবপুর সড়ক যানবাহন চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অনেক স্থানে খানাখন্দে পড়ে যানবাহন উল্টে যায়। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এ কারণে দীর্ঘ যানজটও সৃষ্টি হয়। এতে এ সড়কে চলাচলকারী হাজার হাজার যাত্রীকে প্রতিদিন চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সালনা বাজার ফুটওভার ব্রিজসংলগ্ন মোড় থেকে জেলা শহরের বিলাসপুর বটতলা পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার সড়কে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ও যানবাহন চলাচল করে। এটি গাজীপুর মহানগরের গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম সড়ক। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তায় দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হলে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকামুখী যানবাহনগুলো বিকল্প হিসেবে এ সড়কটি ব্যবহার করে। ওই সব যানবাহন এ সড়ক দিয়ে গাজীপুর শহর হয়ে জয়দেবপুর অথবা ধীরাশ্রম হয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যায়। মহানগরের অন্যান্য শাখা রোডে যেতে এটি ব্যবহার করতে হয়। চার বছর ধরে ওই সড়কে কোনো সংস্কার বা উন্নয়ন হয়নি। সিটি করপোরেশনের আটটি জোনের মধ্যে সালনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সালনা জোন ছাড়াও আশপাশের কয়েকটি ওয়ার্ডের হাজার হাজার লোক এ সিটির গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকায় এ সড়ক দিয়েই যাতায়াত করে। ওই সড়কের পাশে মারিয়ালি এলাকায় গাজীপুর জেলা রেজিস্ট্রি অফিস কমপ্লেক্স। এতে সড়কটিতে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। এ সড়কে প্রতিদিন ট্রাক, বাস, প্রাইভেট কার, সিএনজি, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ অসংখ্য যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল করে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে অনেক আগেই কার্পেটিং উঠে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে সড়কটির অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে গেছে। সালনা ফুটওভার ব্রিজ মোড় থেকে মারিয়ালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত সড়কটির অনেক জায়গায় ভেঙে ছোটবড় অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে মারিয়ালি সাবরেজিস্ট্রি অফিসসংলগ্ন পশ্চিম পাশের মোড়ে, মারিয়ালি প্রাইমারি স্কুলের পাশে, দেশিপাড়া নতুন বাজার, দক্ষিণ সালনা মুন্সিবাড়ী, ফ্রেন্ডস নিটিং কারখানার সামনের অংশসহ বিভিন্ন পয়েন্টে রাস্তার অবস্থা খুবই নাজুক। খানাখন্দে পড়ে যানবাহন উল্টে যায়। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। অনেক সময় যানবাহন গর্তে আটকে দীর্ঘ যানজটেরও সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতিদিন স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ছাড়াও এলাকার সাধারণ মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। স্থানীয় ফজলুল হক বাদল বলেন, ‘মারিয়ালিতে গাজীপুর জেলা রেজিস্ট্রি কমপ্লেক্সে জেলা রেজিস্ট্রি অফিস এবং সদর ও যুগ্ম সাবরেজিস্ট্রি অফিস চালুর পর থেকে এ সড়কে যানবাহন ও মানুষের চাপ অত্যধিক বেড়েছে। সড়কটি বেহাল থাকায় প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে আসা মানুষের খুব কষ্ট হয়। রেজিস্ট্রি অফিসে টাকা পরিবহনেও নিরাপত্তার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে।’ এ ছাড়া সড়কটির পাশে ড্রেন না থাকায় বাসাবাড়ি, কলকারখানাসহ উঁচু জায়গার পানি এর ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে অনেক জায়গায় পানি জমে সড়কটি বিধ্বস্ত হচ্ছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ বলেন, ‘৪ ও ৫ নম্বর জোনের আওতায় সড়কটির উন্নয়নের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। ঠিকাদারও নিযুুক্ত হয়েছে। আশা করি শিগগিরই এ সড়কের উন্নয়নকাজ শুরু হবে।’