আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়ায় কৃষিতে সমৃদ্ধ হয়ে উঠছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা। কৃষক প্রযুক্তির কল্যাণে মৌসুম অনুযায়ী ধান আবাদের পাশাপাশি করছেন বাড়তি আয়। আধুনিক পদ্ধতিতে ধান চাষ লাভবান হওয়ায় কৃষকের আগ্রহ বেড়েছে কয়েক গুণ। চলতি মৌসুমে আমন ধান আবাদ ঘিরে এখন বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক।
উপজেলার কৃষকের মধ্যে কমিউনিটি বা আদর্শ বীজতলা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কৃষি বিভাগ থেকে বীজসহ অন্যান্য উপকরণ দেওয়ায় এ পদ্ধতি বেশ সাড়া ফেলেছে। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ ধান আবাদে আদর্শ বীজতলা তৈরির পদ্ধতি চালু করে। এ পদ্ধতিতে কম খরচে বেশি ফসল উৎপাদন হওয়ায় লাভবান হচ্ছেন কৃষক। ইতোমধ্যে উপজেলার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মধ্যে কৃষি বিভাগ থেকে বিনামূল্যে উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ-সার বিতরণ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, আদর্শ পদ্ধতিতে চারা উৎপাদনের জন্য শুকনো জমি ভালোভাবে চাষ করে জৈব ও রাসায়নিক সার দিতে হয়। জমি প্রস্তুত হলে তৈরি করতে হয় দুই হাত প্রস্থবিশিষ্ট বেড। বীজ ছিটানোর ২৮ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে চারা রোপণের উপযুক্ত হয়।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, পৌর শহরসহ পাঁচ ইউনিয়নে প্রায় ৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ওই সব জমি আবাদ করতে ২৩১ হেক্টর বীজতলা প্রয়োজন। ইতোমধ্যে বীজতলা হয়েছে ১৩০ হেক্টরে। এর মধ্যে আদর্শ বীজতলা রয়েছে ১০ হেক্টর জমিতে। বৈরী আবহাওয়া মোকাবিলা করতে পারায় আদর্শ বীজতলার চারা দিনদিন জনপ্রিয় হচ্ছে।
একাধিক কৃষক জানান, সনাতনের চেয়ে কমিউনিটি পদ্ধতিতে বীজতলা করলে বীজ, শ্রম, সার, জায়গা, সেচ, সময়সহ খরচ কম লাগে। ফলনও ভালো পাওয়া যায়। আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, ‘আদর্শ বীজতলার চারার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এগুলো তোলার সময় শিকড়ে মাটি কম ধরে। জমিতে রোপণের পর শতভাগ চারা জীবিত থাকে এবং অল্প সময়ে বেড়ে ওঠে।’