পারিবারিক কলহের জের ধরে সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে স্ত্রীকে এসিডে ঝলসে দিয়েছেন স্বামী। বুধবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এসিডে গৃহবধূ সালমা খাতুনের (২২) মুখমণ্ডলের ৭০ ভাগসহ গলা ও স্তন ঝলছে গেছে। বেলকুচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে ব্র্যাকের সহযোগিতায় ঢাকা বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
এসিড আক্রান্ত সালমা খাতুন বেলকুচি উপজেলার দৌলতপুর ইউপির শোলাকুড়া গ্রামের সোলায়মান হোসেনের মেয়ে। ঘটনার পর থেকে স্বামী সাইফুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন।
জানা যায়, প্রায় দুই বছর আগে ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের বানিয়াতী গ্রামের আবুল সেখের ছেলের সাইফুলের সাথে সালমা খাতুনের প্রেমের সম্পর্কে গড়ে ওঠে। এরপর তাদের বিয়ে হয়। এটি ছিল সাইফুলের দ্বিতীয় বিয়ে। বিয়ের পর থেকে সাইফুল শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। স্ত্রীর কোনরকম ভরণপোষণ করতেন না। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ চলছিল। মঙ্গলবার বিকেলে চাল কেনা নিয়ে স্ত্রীর সাথে ঝগড়া হয়। সন্ধ্যার পর সাইফুল পলিথিনের মধ্যে এসিড নিয়ে আসে। গভীর রাতে সে স্ত্রীর মুখমণ্ডলে এসিড ছুঁড়ে পালিয়ে যায়। পরে সালমার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। সকালে তাকে বেলকুচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বেসরকারী সংস্থা ব্র্যাকের সহযোগিতায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
এসিড আক্রান্ত সালমার মা সূর্য্য বেগম ও বাবা সোলায়মান জানান, বিকেলে চাল কেনা নিয়ে মেয়ের সাথে ঝগড়া হয়। রাত দশটায় লুঙ্গির ভিতরে লুকিয়ে পলিথিন ব্যাগের মধ্যে এসিড নিয়ে এসে বাড়ির চারপাশে ঘুরঘুর করছিল। কিন্তু বিষয়টি আমরা তখন টের পাইনি। রাত দুইটার দিকে মেয়ের মুখে এসিড ছুড়ে সে পালিয়ে যায়। মেয়ে চিৎকার দিয়ে টিউবওয়েলের কাছে যায়। পরে সারারাত পানি ঢেলে সকালে হাসপাতালে ভর্তি করার পর ব্য্যাকের কর্মীরা তাদের খরচে ঢাকায় নিয়ে যায়।
বেলকুচি উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের চিকিৎসক জাকির হোসেন জানান, মেয়েটির মুখমণ্ডলের ৭০ ভাগসহ গলা ও স্তন ঝলসে গেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) মোসাদ্দেক হোসেন জানান, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে ভিকটিমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আসামিকে গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৬ নভেম্বর, ২০১৬/ আফরোজ-04