বরিশালের গৌরনদী উপজেলার উত্তর বিজয়পুর গ্রামে মুক্তিপণের দাবিতে ৪ বছর বয়সের শিশু হাফিজা আক্তারকে অপহেণের পর হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অপহরণকারী স্বামী ও স্ত্রীকে দণ্ডবিধির পৃথক ৩টি ধারায় যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ১ লাখ ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে হত্যাকাণ্ডে যাবজ্জীবন ও ৫০ হাজার টাকা, মুক্তিপণ দাবিতে যাবজ্জীবন ও ৫০ হাজার টাকা এবং আলামত গোপনের দায়ে ৫ বছর কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শেখ আবু তাহের আজ বিকেলে দুই আসামির অনুপস্থিতে এই রায় ঘোষণা করেন।
সকল দন্ড একই সাথে চলবে (সে ক্ষেত্রে আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদন্ড ভোগ এবং ১ লাখ ৫ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে) বলে রায়ে উল্লেখ করেন আদালত। দন্ডপ্রাপ্তরা হলো- সাইদুর রহমান ও তার স্ত্রী তানজিরা রহমান তানিয়া। অপর দিকে অভিযোগ প্রমাণিত না এক আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানা যায়, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাড়িওয়ালা হারুন হাওলাদারের ভাড়াটিয়া বাদী হায়দার আলী হাওলাদারের স্ত্রী’র সাথে অপর ভাড়াটিয়া আসামি তানিয়ার বাকবিতন্ডা হয়। এর জের ধরে ২০০৮ সালের ১১ আগস্ট হাফিজাকে অপহরণ করা হয়। ১৩ আগস্ট মুক্তিপণ হিসেবে ২ লাখ টাকা দাবি করে হারুনের অপর ভাড়াটিয়া কিসমত জাহান হ্যাপির কাছে রাখতে বলে অজ্ঞাত অপহরণকারীরা। ওই দিনই হারুন হাওলাদারের ছাদের পানির ট্যাঙ্কির মধ্যে থেকে শিশু হাফিজার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় হায়দার বাদী হয়ে ওইদিনই সাইদুর রহমান ও তার স্ত্রী তানজিরা রহমান তানিয়া এবং হ্যাপি ও তার স্বামী মাজাহারুলকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে সাইদুর ও তানিয়াকে গ্রেফতার করা হলে তারা আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানায়, ১২ আগস্ট হাফিজাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর তার মাথা থেতলে দেয়া হয়। সুযোগ বুঝে লাশ ট্যাঙ্কিতে ফেলে দেয় তারা।
এ ঘটনায় একই বছরের ২২ অক্টোবর মামলার তদন্তকর্মকর্তা গৌরনদী থানার এসআই মিজানুল হক মাজাহারুলকে বাদ দিয়ে তিন জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। পরে ট্রাইব্যুনালে ১৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহন শেষে বিচারক দুই জনকে যাবজ্জীবন দণ্ড এবং কিসমত জাহান হ্যাপিকে বেকসুর খালাসের আদেশ দেন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার