১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল উপকূলীয় এলাকা ভোলাসহ প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলো। উপকূলীয় অঞ্চলের স্বজন হারানো মানুষের কাছে এ দিনটি বিয়োগান্তক দিন হিসেবে পরিচিত। এ দিনটিকে স্মরণ করে অশ্রুসিক্ত হন হাজারো ব্যথা বুকে নিয়ে বেঁচে থাকা মানুষগুলো। ২৮ বছর অতিবাহিত হলেও উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষগুলো আজও অরক্ষিত।
ভয়াল ২৯ এপ্রিল দিবাগত রাতে ভোলা, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়খালী, বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালীসহ দেশের ১৩টি উপকূলীয় জেলার শত শত ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড় ও জলচ্ছ্বাসের আঘাতে মৃত্যু হয়েছিল প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষের। ভেসে গিয়েছিল লাখ লাখ হেক্টর জমির ফসল, ৭০ হাজার গবাদি পশু। সেদিন দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সাথে ভোলা জেলার নিম্নাঞ্চল চরফ্যাশনের কুকরি-মুকড়ি, ঢালচর, চর পাতিলা, মুজিব নগড় ইউনিয়ন ও মনপুরা উপজেলায় ১২ থেকে ২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হয়। এতে নারী-পুরুষসহ হতাহত হন শতশত মানুষ। পানিতে ডুবে মারা যায় হাজার হাজার গবাদি পশু, প্লাবিত হয় হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসলাদি।
চরফ্যাশনের মাদ্রাজ ইউনিয়নের মাসুমা খাতুন (৭০) বলেন, সেদিন সকাল থেকেই গুড়িগুড়ি বৃষ্টির সাথে দমকা বাতাস ছিল। মধ্য রাতে বাতাস-বৃষ্টি শুরু হলে ৩ ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে স্কুলঘরে আশ্রয় নিই। ঝড়ে গাছ পড়ে আমার ঘর ভেঙে যায়। সেদিন চরফ্যাশনে সহস্রাধিক প্রাণহানির ঘটনাসহ গবাদি পশুসহ ফসলের অনেক ক্ষতি হয়েছিল।
চরফ্যাশন পৌরসভার কাউন্সিলর আকতারুল আলম সামু বলেন, ৯১ এর বন্যার কথা মনে পড়লে ভয়ে আঁতকে উঠি। সেদিন বাতাসের তীব্র ঝড়ে মনে হয়েছিল যেন এক ধ্বংসলীলা নেমে এসেছে। একের পর এক ঝড় হলেও এখনও উপকূলীয় এলাকা অরক্ষিত রয়ে গেছে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা