গ্রামের বেকার মহিলা, তরুণ-তরুণীদের অবসর সময়কে কাজে লাগিয়ে আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং বেকারত্ব দূরীকরণে ভিন্নধর্মী আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে উদ্যোগ নিয়েছে ‘অদম্য তারুণ্য’।
বিভিন্ন কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থীর গড়া ‘অদম্য তারুণ্য’ দলটি পিঁছিয়ে পড়া ও দারিদ্র্য পরিবারগুলোর বেকার মহিলা, তরুণ-তরুণীদের প্রশিক্ষণ ও উপকরণ দিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার পথে এগিয়ে দিতে কাজ করছেন।
পড়াশোনার পাশা-পাশি আর্থসামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখতেই ‘অদম্য তারুণ্য’র এই উদ্যোগ। ইতোমধ্যে মাসিমপুর রায়পাড়ার ১০টি পরিবারকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং তারা কাজও শুরু করেছেন। প্রতিদিন বাড়ির কাজের পাশাপাশি ২০০ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারছেন তারা।
লিচু পল্লিখ্যাত দিনাজপুর সদর উপজেলার মাসিমপুর রায়পাড়া মন্দির প্রাঙ্গণে গ্রামের মহিলারা বাড়ির কাজ শেষে বাড়তি আয়ের জন্য বাঁশ দিয়ে লিচু রাখার খাঁচা তৈরির কাজ করছেন। আসছে লিচু মওসুমকে লক্ষ্য করে এ খাঁচা তৈরির কাজ করছেন মহিলা ও তরুণ-তরুণেরা। এসব খাঁচা তৈরি করতে প্রশিক্ষণ দিয়ে বাঁশ সরবরাহ করে তৈরি সেই খাঁচা কিনে নিচ্ছে ‘অদম্য তারুণ্য’। তাদের উৎসাহ দিতেই এ ব্যবস্থা। যাতে পড়ে তারা নিজেই এসব তৈরি করে বাজারে বিক্রি করতে পারে। ওই এলাকার রুবি, পূর্ণিমা দেবি, নূরবানু, কৃষ্ণা, বুলবুলি, পূজা, প্রভাতি এরা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে এ কাজ করছেন।
‘অদম্য তারুণ্য’ নামের দলটির সদস্যরা হলেন, দিনাজপুর সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের অনার্স ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান, এমএসসি শেষ বর্ষের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক হোসেন, অনার্স ৩য় বর্ষের সমাজ বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম বর্ষা, কেবিএম কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী গোলাম মোস্তফা, ডিআইএসটি পলিটেকনিকের শিক্ষার্থী নাঈম ইসলাম, দিনাজপুর আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের অনার্স ৪র্থ বর্ষ উদ্ভিদবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী নাজমুস শাদাত সিদ্দিকি ও আবু হারিছ সম্রাট।
স্থানীয় বাসিন্দা পূজা জানান, কয়েকদিন ধরে কাজটি শিখে নিজেই এখন খাঁচা তৈরি করতে পারছি। এটাতে লাভবান হওয়া যাবে।
‘অদম্য তারুণ্য’ এর সমন্বয়ক দিনাজপুর সরকারি কলেজের এমএসসি শেষ বর্ষের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক হোসেন জানান, একটি বাঁশ থেকে ১০ থেকে ১২টি এক হাজার লিচু ধারণের খাঁচা তৈরি করা যাচ্ছে। স্থানীয় বাজারে এক হাজার লিচুর একটি খাঁচার মূল্য ৬০-৮০ টাকা। এখন সব উপকরণসহ প্রশিক্ষণ দিয়ে খাঁচাগুলো তৈরি করে প্রশিক্ষণার্থীদের ২০ টাকা মজুরি দেয়া হচ্ছে।
এ কাজ অব্যাহত রাখলে এক সময় প্রতিদিনই একজন মহিলা ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা আয় করতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা ও কেবিএম কলেজিয়েট স্কুলের সহকারী শিক্ষক আব্দুল মালেক জানান, কলেজ শিক্ষার্থীদের এ ভাবনাটি শোনার পর আমি আমার গ্রামে কাজের আহ্বান জানিয়েছি।
বিডি প্রতিদিন/কালাম