কৃষকের স্বপ্নের ফসল ধানে ব্লাস্ট রোগ আক্রমণ করায় সিরাজগঞ্জে মাঠের পর মাঠ ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ওষুধ প্রয়োগ করেও কোন সুফল পাচ্ছে না কৃষক। ধান গাছ সতেজ থাকলেও শীষগুলো চিটা হয়ে যাচ্ছে। ঋণ-ধার ও পরিশ্রমের ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
কৃষকদের অভিযোগ-কৃষি বিভাগও সময়মত পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছে না। এ অবস্থায় সরকারের কাছে ভুর্তুকি দাবী জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর সিরাজগঞ্জ জেলায় ১লাখ ৪১ হাজার ৩৭ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে প্রায় ৩ হেক্টর জমিতে বেশি ধান আবাদ হয়েছে। জেলার মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে কৃষকের স্বপ্নের সোনালী ফসল বোরো ধান। ফলনও বেশ ভাল হয়েছিল। শেষ মুহুর্তে ফসল কেটে ঘরে তোলার স্বপ্নে বিভোর ছিল কৃষক। কিন্ত হঠাৎ করেই দুই-থেকে তিন সপ্তাহ আগে ধানে দেখা দেয় ব্লাস্ট রোগ। গাছগুলো সতেজ থাকলেও ব্লাস্ট রোগে ধানের শীষগুলো সব চিটা হয়ে যাচ্ছে। ব্লাস্ট রোগ কৃষকের স্বপ্নকে ম্নান করে দিচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রতনকান্দি, কাজিপুর উপজেলার গান্দাইল, রায়গঞ্জ উপজেলার ধামাইনগর, তাড়াশ উপজেলার নওগা, দেশিগ্রাম ও উল্লাপাড়া উপজেলার উধুনিয়াসহ জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের শতশত বিঘা জমির ধানে ব্লাস্ট রোগ আক্রমণ করেছে। ওষুধ প্রয়োগ করেও ফল পাচ্ছে না কৃষক।
উল্লাপাড়ার প্রতাপ গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম, শাহজামাল ও নিজাম উদ্দিন জানান, ঋণধার করে ধান রোপন করেছিলাম। ব্লাস্ট রোগের কারণে তাদের তিন জনের ১৮ বিঘা জমির ধান সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। এখন চোখেমুখে অন্ধকার দেখছি। ১৫ বিঘা জমিতে ১৫ মণ ধানও হবে না। শ্রমিক দিয়ে ধান কেটে গরুকে খাওয়ানো হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হাবিবুল হক জানান, প্রায় ৫০ হেক্টর জমির ধান ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ব্লাস্ট রোগ যেন বৃদ্ধি না পায় সেজন্য কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের নানা ধরনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। লিফলেটও বিতরণ করা হচ্ছে। তিনি জানান, একটি ইউনিয়নে মাত্র ৩ জন মাঠকর্মী রয়েছে। তিন জনের পক্ষে কয়েক হাজার কৃষককে পরামর্শ দেয়া কষ্টকর। তারপরেও কৃষি বিভাগ যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার