পাহাঢ়ি ঢল আর ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে গেল কয়েক দিন থেকে তিস্তা নদীতে বেড়েছে পানির প্রবাহ। শুক্রবার বিকেলেও (বেলা ৩টায়) বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় নদীটির ডালিয়া পয়েন্টে।
পানি বাড়ার ফলে নদীর নিম্নাঞ্চল এবং চর এলাকাগুলো পানি বন্দি অবস্থায় পড়েছে। ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের দশ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। নদীতে পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তা ব্যারেজ বেষ্টিত বাঁধগুলো রক্ষায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়ে রেখেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড(পাউবো)। আশপাশ এলাকার মানুষদের সতর্ক থাকতেও প্রচারণা চালিয়েছে বিভাগটি।
জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হোসেন জানান, ইউনিয়নের ৬,৭ ও ৮ নং ওয়ার্ডের প্রায় তিনশ' পরিবার পানি বৃদ্ধির ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েন। এসব এলাকার কিছু মানুষ বাঁধে কিংবা সড়কে অবস্থান নেন।
ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আতাউর রহমান বলেন, পানির কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলেও শুক্রবার থেকে নদীতে পানি কমতে থাকলে এর প্রভাবও শুরু হয়। কিছু এলাকা তলিয়ে গেলেও সেগুলো থেকে পানি নামতে শুরু করেছে।
ডালিয়ার বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে বাড়তে থাকে তিস্তার পানি। এদিন রাত নয়টায় বিপদসীমার ২৮ সেন্টিমিটার উপড় দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিলো তিস্তার পানি।
তবে শুক্রবার ভোর থেকে কমতে থাকে পানির প্রবাহ। বেলা ৩টার দিকে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে নদীর পানি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী হাফিজুল হক জানান, আমরা পানি বাড়ার সংবাদটি আগাম জানতে পারি। এ কারণে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি। জানানো যায় আশপাশের মানুষদের।
গেল কয়েকদিনের পানি বৃদ্ধির ফলে নদী বেষ্টিত মানুষদের মাঝে প্রচারণা চালানো হয়েছে। কোথাও ভাঙ্গণ দেখা দিলে তাৎক্ষণিক ভাবে জিও ব্যাগ প্রস্তুত রয়েছে সেগুলো বসানো শুরু হচ্ছে।
তিনি বলেন, ডান তীর, বাম তীর, গাইড বাঁধ এমনকি বেড়ি বাঁধ মিলে প্রায় ৬০কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে আমরা সেগুলো পর্যবেক্ষণ করছি সার্বক্ষণিক ভাবে। কোন প্রয়োজনীয়তা থাকলে তাৎক্ষণিক ভাবে মোকাবেলা করার সক্ষমতা রয়েছে।
এদিকে পরিস্থিতি মোকাবেলায় ডিমলা উপজেলায় ৫০ মেট্রিক টন চাল, ৫শ' প্যাকেট শুকনো খাবার এবং ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন বিভাগ।
জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা এস এ হায়াত বলেন, আমরা এখোনো পানিবন্দি বা বন্যার খবর পাইনি। যেহেতু নদীতে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে প্রবাহিত হচ্ছে এরফলে কোন এলাকায় প্রয়োজন হলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবো। এক্ষেত্রে বরাদ্দ বিতরণ করা হবে।
জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী জানান, তিস্তায় পানি বৃদ্ধির বিষয়টি জেলা প্রশাসক সার্বিক ভাবে মনিটরিং করছে। আমিও এলাকা ঘুরে এসেছি। প্রয়োজন অনুযায়ী সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে তাৎক্ষণিক ভাবে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন