বগুড়া সরকারি শাহ সুলতান কলেজের ছাত্র সাব্বির রহমান শাওনের (১৯) মৃত্যুকে দুর্ঘটনা নয়, হত্যা দাবি করে দোষীদের গ্রেফতার ও দ্রুত বিচার চাইলেন সহপাঠি ও এলাকাবাসী।
বুধবার সকালে বগুড়া শহরের সাতমাথায় এক মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এ দাবি করা হয়।
এর আগে ১১ আগস্ট সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ হন বগুড়া ঠনঠনিয়া সুফিপাড়া এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে সাব্বির রহমান শাওন। পরে মৃতদেহ জেলার শাজাহানপুর উপজেলার নয় মাইল মহাসড়কের পাশ থেকে উদ্ধার করে থানা পুলিশ।
শাওনকে তার এলাকার মো. মিঠু ও মো. মুন্না নামে দুই বন্ধু বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় বলে দাবি করে শাওনের মা সেলিনা আক্তার। পরে সারারাত খোঁজ করার এক পর্যায়ে শাওনের বন্ধু মিঠুও তাদের সাথে শাওনের খোঁজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে ভোর ৫ টায় শাওনের মৃতদেহ শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে খোঁজ পায়।
নিহত শাওনের মা সেলিনা আকতার দাবি করেন, পরিকল্পিতভাবে তার ছেলে সাব্বির রহমান শাওনকে হত্যার পর মহাসড়কের পাশে ফেলে রেখে গেছে। তিনি এ ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করেন।
তিনি বলেন, থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি জানান, ঘটনাস্থল নয়মাইল গ্যাস কোম্পানীর সামনে মোটরসাইকেলের পেছনে বসা শাওন মহাসড়কে পরে গেলে পেছন থেকে আসা একটি বাস তাকে চাপা দিয়ে চলে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই শাওনের মৃত্যু হয়। পরে মিঠু ও মুন্না ভয়ে সেখান থেকে বাড়ি ফিরে আসে। সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজ অনুসারে হত্যা নয় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় শাওনের।
পুলিশের বক্তব্য অসত্য দাবি করে নিহতের পরিবার জানায়, ঘটনার রাতের সম্পূর্ণ ভিডিও ফুটেজ তাদের দেয়া হয়নি। এই ঘটনায় শাওনের মা সেলিনা আকতার বাদী হয়ে বগুড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ঠনঠনিয়া সুফিপাড়ার জামাল হোসেনের ছেলে মো. মিঠু (২০) এবং জিল্লুর রহমানের ছেলে মো. মুন্নাকে (২৮) আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
নিহত সাব্বির রহমান শাওন এ বছর বগুড়া শাহ সুলতান সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তির্ণ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং করছিলেন। মানববন্ধন কর্মসূচিতে শাওনের বাবা হাবিবুর রহমান, ভাই, আত্মীয়স্বজন, এলাকাবাসী ও তার সহপাঠিরা অংশ নেয়।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তি জানান, বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কাজ করেছে। তাতে দেখা গেছে কলেজ ছাত্র শাওন মোটরসাইকেলের পেছনে বসা থেকে পড়ে যায়। এসময় ঠিক পেছনে থাকা একটি যাত্রীবাহী বাস তাকে চাপা দিয়ে চলে যায়। পরে ভোরের দিকে তার লাশ শনাক্ত হয়।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন