মাদক সেবনের টাকা না পেয়ে বগুড়ার ধুনট উপজেলায় হাত-পা বেঁধে শরীরে পেট্রোল ছিটিয়ে আগুনে পুড়িয়ে বৃদ্ধ মাকে হত্যা করল ছেলে। মাদকাসক্ত ছেলে সোহানুর রহমান খোকন মন্ডলকে (৩২) এলাকাবাসী আটক করে গণধোলাই দিয়ে থানা পুলিশে দিয়েছে।
পুলিশ ও গ্রামবাসী জানান, ধুনট উপজেলার গজারিয়া গ্রামের আব্দুস সামাদ মন্ডল ও খুকি খাতুনের (৬৫) কনিষ্ঠপুত্র সোহানুর রহমান খোকন মন্ডল। সবার ছোট হওয়ায় বাবা-মায়ের প্রিয় ছিল খোকন। ছাত্র জীবনে বখে যাওয়া খোকন বিভিন্ন সময়ে তালবাহানা করে আবার ব্যবসার কথা বলে পরিবার থেকে দফায় দফায় টাকা হাতিয়ে নিয়ে মাদক সেবনে ব্যয় করত।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, রবিবার বিকেল ৪টায় ঘরের মধ্যে মাকে বন্দি করে খোকন মন্ডল। এরপর তার বাবার কাছে ৫ হাজার টাকা দাবি করে। কিন্তু তার বাবা টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে হাসুয়া (দেশীয় অস্ত্র) দেখিয়ে ভয় দেখায়। বাধ্য হয়ে সামাদ মন্ডল টাকা সংগ্রহের জন্য প্রতিবেশীদের কাছে ধর্না দেন। কিন্তু তিনি টাকা ম্যানেজ করতে পারেনি। এদিকে বাবা টাকা নিয়ে বাড়ি না ফেরায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে খোকন। নিজের মোটরসাইকেল থেকে পেট্রোল বের করে নিয়ে যায় ঘরে। ওই ঘরে মায়ের হাত-পা বেঁধে শরীরে পেট্রোল ছিটিয়ে দেয়। তারপর মায়ের শরীরে আগুন ধরিয়ে দিয়ে দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করে। ঘরের মধ্যে আগুন জ্বলতে দেখে প্রতিবেশিরা ধাওয়া করে খোকন মন্ডলকে আটক করে। পরে তারা ওই ঘরে গৃহবধূ খুকি খাতুনকে দগ্ধ অবস্থায় দেখতে পান।
এসময় স্থানীয় লোকজন খোকন মন্ডলকে গণধোলাই দিয়ে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেন। অন্যদিকে দগ্ধ খুকি মন্ডলকে চিকিৎসার জন্য ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়ায় নেওয়ার পথে রবিবার রাত ৮টায় খুকি খাতুন মারা যান।
বগুড়ার ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, মাদকাসক্ত খোকন মন্ডল ঘরের মধ্যে হাত-পা বেঁধে পেট্রোল ঢেলে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। স্থানীয় লোকজন ওই বৃদ্ধ মাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য বগুড়ায় নেওয়ার পথে রাত ৮টায় তিনি মারা যান। সোমবার ময়না তদন্ত শেষে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। অভিযুক্ত ছেলে খোকন মন্ডলকে আটক করা হয়েছে। গণধোলাইে আহত হওয়ায় পুলিশ হেফাজতে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার চিকিৎসা চলছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার