নরসিংদীর রায়পুরায় বিয়ের আশ্বাস দিয়ে এক গার্মেন্টস কর্মীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুই ধর্ষককে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে ধর্ষণের কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে অভিযুক্তরা।
আজ সোমবার বিকেলে অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামীমা আক্তারের আদালতে জবানবন্দি প্রদান করে। নির্যাতিতা ওই নারী গোপালগঞ্জ জেলার বাসিন্দা ও গাজীপুরের একটি গার্মেন্টসের শ্রমিক।
গ্রেফতারকৃতরা হল- নির্যাতিতার প্রেমিক, রায়পুরা উপজেলার বেগমাবাদ হুগলাকান্দি গ্রামের ফিরোজ মিয়ার ছেলে শিপন মিয়া (২০) ও তার সহযোগী একই উপজেলার ঘাগটিয়া আলগী এলাকার হুছন উদ্দিনের ছেলে শামীম মিয়া (১৯)। এ ঘটনায় অপর অভিযুক্ত একই উপজেলার বেগমাবাদ পল্টন এলাকার দুলাল মিয়ার ছেলে রুবেল মিয়া পলাতক রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, স্বামী পরিত্যক্তা ও এক সন্তানের জননী গাজীপুরের ওই গার্মেন্টস কর্মীর সাথে দেড় বছর আগে রায়পুরার শিপন মিয়ার ফোনে পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক বছর যাবত তাদের মধ্যে ফোনে কথাবার্তা চলছিল।
প্রেমের সম্পর্কের জেরে শিপন তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়। এতে ওই নারী রাজি হয়। পরে তাকে নরসিংদীর রায়পুরা আসার প্রস্তাব দেয়। শিপনের কথামতো রবিবার রাতে গাজীপুরের বোর্ড বাজার হতে রায়পুরায় আসে ওই নারী। রায়পুরার নীলকুঠি বাসস্ট্যান্ডে নামার পর শিপন ও তার দুই সহযোগী শামীম এবং রুবেল ওই নারীকে খাবার খাওয়ার কথা বলে একটি গ্যারেজে নিয়ে যায়। সেখানে কথিত প্রেমিক শিপন একাধিকবার তাকে ধর্ষণ করে। পরে তার দুই সহযোগীও পালাক্রমে তাকে ধর্ষণ করে।
এসময় চিৎকার করলে মেরে ফেলার ভয় দেখানো হয়। রাতে এক পর্যায়ে ওই নারী গ্যারেজ থেকে পালিয়ে বের হয়ে আসেন। পরে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে ওই নারী রায়পুরা থানায় গিয়ে তিনজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার দুপুরে পুলিশ অভিযুক্ত শিপন ও শামীমকে গ্রেফতার করে। ওই সময় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন। পরে অভিযুক্তদের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামীমা আক্তারের আদালতে শোপর্দ করা হয়। সেখানে ধর্ষণের কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন গ্রেপ্তারকৃত দুইজন। পরে নির্যাতিতা ওই নারীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি অপারেশন) মোজাফ্ফর বলেন, বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ওই নারীকে রায়পুরায় আনা হয়েছিল। পরে তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। গ্রেফতারের পর দুইজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। সন্ধ্যায় তাদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার