পার্বত্যাঞ্চলে মাল্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। পাহাড়ে উৎপাদিত এসব মাল্টার রং সবুজ। দেখতে অনেকটা মিষ্টি লেবুর মত। এখন পাহাড়ের সব বাগানে এসেছে ফলন। গাছে গাছে ঝুলছে কাঁচা-পাকা মিষ্টি মাল্টা। দেখতে বেশ আকর্ষণীয় এবং স্বাদে পরিপূর্ণ। কৃষকরা বলছে, পাহাড়ের মাটি ও আবহাওয়া উপযুক্ত থাকায় এবার মাল্টা চাষে সফল হয়েছে তারা। কম খরচ, হয় ব্যাপক ফলন। লাভও অধিক। কৃষকদের অর্থনৈতিক মান্নোয়নে বিরাট ভূমিকা রাখছে পাহাড়ে উৎপাদিত মাল্টা। এসব মাল্টা আবার পার্বত্যাঞ্চলের বাজারের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।
রাঙামাটি কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি জেলায় এবার মাল্টা আবাদ হয়েছে ২১০ হেক্টর জমিতে। আর উৎপাদন হয়েছে এক হাজার ৮২০ মেট্টিক টন। যা গেল বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। পাহাড়ি এ মাল্টা এরই মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। তাই আবাদ হয়েছে রাঙামাটি সদর, বাঘাইছড়ি, বিলাইছড়ি, বরকল, জুরাছড়ি, কাপ্তাই ও নানিয়ারচর উপজেরায়। পাহাড়ি জুম চাষীরা এখন মাল্টা চাষের বেশ আগ্রহী। পাহাড়ি মাটি উর্বর ও সঠিক পরিচর্যার কারণে সহজে বেড়ে উঠছে মাল্টা গাছগুলো। তাছাড়া ফলনও হচ্ছে বাম্পার।
স্থানীয় মাল্টা চাষি সুনীল বরণ তালুকদার বলেন, গত বছর বাগানের মাল্টা বাজারজাত করে ২ লাখ টাকা আয় হয়েছে। এবারও তার বাগানে বাম্পার ফলন হয়েছে। এবার ১০ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রির প্রত্যাশা করছেন তিনি।
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার শিজক উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাক্য চাকমা জানান, পাহাড়ে উৎপাদিত মাল্টার নাম বারি মাল্টা-১। অন্যান্য মাল্টার রঙ দেখতে হলুদ হলেও পাহাড়ে উৎপাদিত মাল্টা দেখতে সবুজ। তবে খুব রসালো আর মিষ্টি। স্থানীয় কৃষি বিভাগ মাল্টা চাষিদের সহযোগিতা করে যাচ্ছে। এসব মাল্টার চাহিদা অনেক। তাই সহজে বাজারজাত করা যায়। তাই পাহাড়ি জমিতে মাল্টা চাষ বাড়াতে রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে মাল্টার চারা বিতরণ করে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
রাঙামাটি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক পবন কুমার চাকমা জানান, এখানকার মাটি ও আবহাওয়া যে কোন চাষাবাদের জন্য উপযোগী। তাই সহজে কৃষকরা সফলতা পায়। তেমনি মাল্টা বাগান করে অনেক কৃষক এখন আর্থিকভাবে স্বচ্ছল।
তিনি বলেন, পাহাড়ে জুম চাষের পরিবর্তে অনেক কৃষক এখন মাল্টা চাষ করছে। পাহাড়ে উৎপাদিত দেশীয় মাল্টার সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো গেলে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারে স্থানীয় কৃষকরা।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা