নীলফামারী জেলায় চাহিদার চেয়ে বরাদ্দের অপ্রতুলতায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে জনপ্রতিনিধিদের। অপর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী বিতরণে যেন হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
খাদ্য সহায়তা না পাওয়া ব্যক্তিরা এনিয়ে জেলার কয়েকটি স্থানে করেছেন বিক্ষোভ কর্মসূচিও। তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে তালিকা করে বঞ্চিত মানুষদের খাদ্য সামগ্রী দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ।
এদিকে, পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারি বরাদ্দের পাশাপাশি গণবিজ্ঞপ্তি জার করে কর্মহীন মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ফান্ড গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। এখানে যে কেউ দান করতে পারবেন নগদ অর্থ কিংবা সামগ্রী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা সদরের গোড়গ্রাম, ইটাখোলা, সংগলশী, কুন্দপুকুর, চড়াইখোলা, ডোমার উপজেলার সোনারায়, সৈয়দপুর উপজেলার খাতামধুপুর এবং উপজেলা শহরের উত্তরা আবাসন, সাহেবপাড়া ও মিস্ত্রিপাড়ায় খাদ্যের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন বিক্ষুদ্ধ মানুষরা।
জলঢাকা উপজেলার বালাগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম লিপন জানান, আমার ইউনিয়নে ত্রাণ প্রয়োজন ৬৫৫৫ জনের কিন্তু বরাদ্দ পেয়েছি মাত্র ৭২৭ জনের। এখনো দিতে পারিনি ৫৮২৮টি পরিবারকে। করোনার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়ায় প্রতিনিয়ত এসব মানুষ আমাদের কাছে আসছেন কিন্তু কিছু করার নেই। আমাদের নাজেহাল হতে হচ্ছে।
সদর উপজেলার রামনগর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, ইউনিয়নে ৪২০০মানুষকে ত্রাণ সহযোগিতা দেয়া প্রয়োজন কিন্তু দিতে পেরেছি মাত্র ৬০০ জনকে। এখনো সুবিধার বাহিরে ৩৬০০মানুষ।
তিনি জানান, সুবিধা বঞ্চিত এসব মানুষরা খাদ্য সংকটে বিপাকে পড়ছেন দিন যত যাচ্ছে ততই। অতিদ্রুত বরাদ্দ বাড়নো প্রয়োজন। নিশ্চয় এদিকে প্রধানমন্ত্রী খেয়াল রাখবেন।
এদিকে, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে কিছু এলাকায় ত্রাণ দেওয়ার নামে সবার কাছ থেকে আইডি কার্ড নিয়েও দিতে না পারায় বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেন স্থানীয় মানুষরা। ত্রাণ বিতরণেও রয়েছে সমন্বয়হীনতার অভিযোগ।
সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) বেলায়েত হোসেন জানান, আমি সংগলশী ইউনিয়নের শিমুলতলি, টেক্সটাইল ও গোড়গ্রামে গিয়েছিলাম সেখানে জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন ত্রাণ না পাওয়া মানুষরা। একজন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য যে রবাদ্দ পেয়েছেন সেটি পুরো এলাকায় সমন্বয় করে বিতরণ করলে হয়তো এমনটি হতো না। বিক্ষুদ্ধ মানুষদের আমরা আশ্বাস দিয়েছি তালিকা করে সহযোগিতা প্রদান করার বিষয়ে।
জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্র জানায়, অগ্রাধিকার তালিকায় ৪ লাখ ৬৬ হাজারের মধ্যে এক লাখ ৬১ হাজার পরিবার সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি ও খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় রয়েছে। বাকি ৩ লাখ ৫ হাজার পরিবারের মাঝে এখন পর্যন্ত ৫৯ হাজার পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেয়া সম্ভব হলেও এখনও সুবিধার বাহিরে রয়েছেন ২ লাখ ৪৬হাজার পরিবার।
সরকারি সহায়তার পাশাপাশি স্থানীয়দের সহযোগিতা চেয়ে গেল ২এপ্রিল গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে জেলা প্রশাসন। এতে বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানানো হয়।
জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী জানান, সরকারি বরাদ্দ পর্যায়ক্রমে আসছে। সেটি উপ বরাদ্দ দিয়ে বিতরণ করা হচ্ছে মানুষদের কাছে। এরপরও অনেকে সংকটে রয়েছেন এজন্য সহযোগিতা করলেও আরও বেশি মানুষকে সুবিধা দেয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, সরকারি এসব বরাদ্দ যাতে সঠিক ভাবে বণ্টন হয় এবং নিরপেক্ষভাবে বিতরণ করা হয় এজন্য সম্মিলিত ভাবে কাজ করা হচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন