ভোলার সরকারি স্কুলগুলোতে লটারির মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা। একদিকে পরীক্ষা না হওয়ায় মেধাবী শিক্ষার্থীদের যোগ্যতার পরিবর্তে ভাগ্যের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে, অপরদিকে লটারিতে অংশ নেয়ার জন্য কোনও কোনও শিক্ষার্থী একাধিকবার আবেদন করছে। ফলে ভর্তির লটারি প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
তবে কোন শিক্ষার্থী একাধিকবার আবেদন করলে তার অভিভাবকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন ভোলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, ভোলা জেলা শহরের সরকারি উচ্চ বালক ও বালিকা বিদ্যালয়ে ৩য় শ্রেণিতে প্রভাতি ও দিবা শাখায় সর্বমোট ৩২০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবে। বিগত বছরগুলোতে স্বচ্ছতার সাথে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী বাছাই করা হতো। কিন্তু মাহমারি করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর ভর্তি পরীক্ষা হচ্ছে না। সারাদেশের মত ভোলার সরকারি স্কুলগুলোতেও লটারির মাধ্যমে ভর্তির কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে অনলাইলে আবেদন করা শুরু হয়েছে। আগামী ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করা যাবে। লটারির মাধ্যমে ভর্তির সুযোগ থাকায় অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী বঞ্চিত হবার আশঙ্কা রয়েছে। আবার অনেক অযোগ্য শিক্ষার্থীও ভর্তির সুযোগ পেয়ে যাবে। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে লটারির কথা শুনে অনেক অসাধু অভিভাবক ১ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্ম নিবন্ধন সনদে বয়স বাড়িয়ে আবেদন করছেন। আবার অনেক অভিবাবক একই শিক্ষার্থীর নামে একাধিক আবেদন করছেন। এমনকি, কেউ কেউ একই শিক্ষার্থীর নামে একই স্কুলের জন্য ১৫ থেকে ২০ বারও আবেদন করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এতে করে যাচাই বাছাই ছাড়া যদি লটারি হয় তা হলে একদিকে লটারি প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিবে। অপরদিকে, একই শিক্ষার্থী একাধিকবার লটারিতে নাম ওঠার সম্ভাবনাও রয়েছে। ফলে গোটা ভর্তি প্রক্রিয়ায় একধরণের জটিলতার সৃষ্টি হবে বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছেন। অভিভাবকরা জানান, ভর্তি প্রক্রিয়ায় এসব জটিলতা নিরসন না হলে প্রকৃত মেধাবি শিক্ষার্থীরা ভালো স্কুলে পড়াশুনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে।
ভোলা শহরের সমবায় মার্কেটের শাহবাজপুর কম্পিউটার সেন্টারের সত্ত্বাধিকারী অনলাইন উদ্যোক্তা ইসতিয়াক আহমেদসহ একাধিক দোকানি জানান, অনলাইনে যে প্রক্রিয়ায় আবেদন করতে হয় তাতে একই শিক্ষার্থী আবেদন ফি পরিশোধের মাধ্যমে একই বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য যতবার খুশি আবেদন করতে পারছে। ফলে লটারির স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
তিনি আরও জানান, আবেদন করার সময় শিক্ষার্থীর ছবি এবং পিতা-মাতার ভোটার আইডি কার্ড ইউনিক করা হলে এই জটিলতা কিছুটা হলেও নিরসন করা সম্ভব হত।
সন্তানের ভর্তির জন্য বয়স বাড়ানো এবং একাধিকবার আবেদন করার বিষয়টি দণ্ডনীয় অপরাধ বলে জানান ভোলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক। তিনি আরও জানান, কোন শিক্ষার্থী একই স্কুলে একাধিকবার আবেদন করেছে এমন প্রমাণ পাওয়া গেলে তার আবেদন বাতিলের পাশাপাশি অভিভাবকের বিরুদ্ধে জেল জরিমানাসহ কঠোর আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ