পুলিশের বিশেষ সেবা ৯৯৯-এ কল পেয়ে গণধর্ষণের শিকার হওয়া কিশোরীকে ২২ ধারা জবানবন্দী শেষে গাজীপুরের সেইফহোম কাস্টডিতে পাঠিয়েছে পুলিশ। গত শুক্রবার জবানবন্দী গ্রহণ করেন নেত্রকোনা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতের বিচারক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শিহাব উদ্দিন।
ওইদিনই আদালতের মাধ্যমে কিশোরীকে অবৈধ ব্যবসার জন্য নিয়ে আসা পারভীন আক্তার ওরফে মায়া শেখ (২৭) নামের ব্যবসায়ী নারীকে তার সহযোগী লক্ষণ দাস (২২) সহ জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন পূর্বে নেত্রকোনার সীমান্ত উপজেলা কলমাকান্দার নাজিরপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের বিভিন্ন নাম ব্যবহারকারী মায়া শেখ নামের এক নারী ওই কিশোরীকে ঢাকা থেকে নিয়ে আসেন। এরপর দুর্গাপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় গভীর রাতে মোটরসাইকেল যোগে কিশোরীকে পাঠায়। বড়দিনের পর একদিন রাতে দূর্গাপুর কলমাকান্দা সড়কে টহল পুলিশ আটকালে তার আত্মীয় মায়া শেখের সাথে কলমাকান্দা এসেছে বলে জানায় কিশোরী। পরবর্তীতে ২৯ ডিসেম্বর কলমাকান্দা যমুনা নামের এক হোটেলে তার নাম রেজিস্ট্রি পাওয়া যায়। এর পরদিন ৩০ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মোটরসাকেলে যোগে কোন এক জায়গায় কিশোরীকে পাঠান মায়া শেখ। পরবর্তীতে মধ্যরাতে কিশোরীকে কিছু ছেলে ধরে নিয়ে ধর্ষণ করছে বলে পুলিশের সাহায্য চেয়ে ৯৯৯ এ ফোন আসে।
খবর পেয়ে তাৎক্ষনিকভাবে পুলিশ রাতেই উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর উত্তরপাড়া এলাকার আবু সাঈদ চৌধুরীর বাড়ীর পুকুর পাড় থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
পরদিন ৩১ ডিসেম্বর পুলিশের ঊর্ধ্বতনসহ একটি চৌকস টিম এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই কিশোরীকে ঢাকা থেকে নিয়ে আসা মায়া শেখ ও সহযোগী যুবক লক্ষণ দাসকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে মায়া শেখ জানান, কিশোরী তার আত্মীয়। তার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলো। কলমাকান্দা থেকে এক অন্য একটি জায়গায় মোটরসাইকেলে উঠিয়ে দিলে পথে কিছু ছেলে ধরে নিয়ে গেছে বলে কলটি তিনিই করেছিলেন। স্বীকারোক্তিসহ তথ্যপ্রমাণ পেয়ে মোটরসাইকেলটি জব্দ করে পুলিশ। এ ঘটনায় কিশোরী বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে আটক দুজনের নামসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও দুইজনকে আসামি করে কলমাকান্দা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে কলমাকান্দা থানার ওসি এটিএম মাহমুদুল হক সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মায়া শেখ এর আগেও কয়েকবার গ্রেফতার হয়েছে। সে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিচয় দেয়। ঢাকায় পরিচয় হওয়া কিশোরীকে বেশি টাকায় কাজ দেবার কথা বলে নিয়ে আসে বলে ভিকটিম সূত্রে জানতে পারি। আমরা কিশোরীকে সেইফহোমে পাঠিয়েছি। আসামি দুজন জেলহাজতে রয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা