সাত মাস বৃষ্টির দেখা নেই যশোরে। প্রচণ্ড তাপদাহ আর অনাবৃষ্টির কারণে জেলার ৮টি উপজেলার মাঠ-ঘাট, খাল-বিল, জলাশয়, পুকুর ও নদীর পানি শুকিয়ে গেছে। পানির অভাবে গাছ থেকে ঝরে পড়ছে মৌসুমী আমসহ বিভিন্ন ধরনের ছোট ছোট ফল।
তাপমাত্রা বেড়ে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস উঠে গেছে। প্রচণ্ড রোদের তাপে মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। পানির অভাবে সর্বত্র চলছে সংকট। তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে গোসল ও সুপেয় পানির । প্রচণ্ড খরতাপে চারিদিকে যেন হাহাকার অবস্থা। মাঠ-ঘাট তপ্ত রোদ্দুরে খাঁ খাঁ করছে। দীর্ঘদিন পানি না হওয়ায় পানির স্তর স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ নিচের স্তরে নেমে গেছে।
শার্শা উপজেলা জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানান, স্বাভাবিক সময়ে পানির স্তর মাটির ১৬ ফুট নিচে থাকে। উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় পানির স্তর বর্তমানে ২৫ থেকে ৪০ ফুট নিচে নেমে যাওয়ায় নলকূপে পানি উঠছে না। চৈত্র-বৈশাখ মাস এলেই উপজেলার বাগআঁচড়া, কায়বা, উলশী, পুটখালি ও গোগা ইউনিয়নের প্রায় সবগুলো গ্রামের অধিকাংশ নলকূপ অকেজো হয়ে পড়ে। এ সময়টাতে গোটা যশোরেই পানির সংকট দেখা যায়।
এবার মনে হয় সংকট অন্যবারের তুলনায় একটু বেশি। এলাকার জন সাধারণের কথা মাথায় নিয়ে সরকার প্রায় ৩০০ সাব-মার্সিবল পাম্প বসানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। মাত্র ১০ হাজার টাকায় সুবিধাভোগীদের মধ্যে পাম্পগুলো দেওয়া হচ্ছে। যে কেউ সরকারের দেওয়া এ সুযোগ গ্রহণ করতে পারবে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আলিফ রেজা জানান, চলতি বোরো মৌসুমে গভীর এবং অগভীর নলকূপের মাধ্যমে জমিতে সেচ দেওয়ার কারণে পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। স্থানীয়ভাবে খাল-বিল তালিকাভুক্ত করার কাজ চলছে। জেলা প্রশাসকের কাছে এগুলো খনন করার প্রস্তাব পাঠানো হবে। নদী ও খালে পানি ধরে রাখতে পারলে এবং ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমাতে পারলে সেচ মৌসুমে পানির নিচের স্তর ধরে রাখা সম্ভব হবে।
এদিকে, পানি সংকটের কারণে খাবার পানির জন্য জনগণকে দূর-দূরান্তে কলস নিয়ে ছুটতে হচ্ছে। বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। শুধুমাত্র শার্শায় দেড় হাজার নলকূপ অকেজো হয়ে পড়েছে। জেলার কিছু জায়গায় পানি মিললেও এ মাসের শুরুতে একেবারেই পানি শূন্য হয়ে পড়েছে শার্শা, ঝিকরগাছা ও চৌগাছার হাজার হাজার নলকূপ।
বিডি প্রতিদিন/এমআই