করোনাভাইরাসের প্রকোপে বিশ্ব অর্থনীতিতে বিপর্যয় ঘটেছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি সচল রয়েছে। করোনাসহ নানা সঙ্কটের মধ্যে দেশের একমাত্র চতুদের্শীয় স্থলবন্দর বাংলাবান্ধা সচল থাকায় রাজস্ব আয় অব্যাহত রয়েছে। কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চলছে আমদানি-রফতানির কার্যক্রম। জানা গেছে, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। নানা সংকটের মধ্য দিয়েও এ বন্দরে রাজস্ব আদায় হয় ৬১ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এবছর লক্ষ্যমাত্রার প্রায় দ্বিগুণ রাজস্ব আয় হয়েছে এই বন্দরে।
২০১১ সালে ২২ জানুয়ারি বাংলাদেশের বাংলাবান্ধায় সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এবং ভারতের ফুলবাড়ীতে ভারতের সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি নিজ নিজ দেশে বন্দরের কার্যক্রম তথা দ্বিপক্ষীয় চুক্তির আলোকে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলের উদ্বোধন করেন।
এ স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি হচ্ছে পাট ও পাটজাত পণ্য, আলু, ব্যাটারি, কোমল পানীয়, গার্মেন্টস সামগ্রী, ক্যাপ, হ্যাঙ্গার, সাবান, বিস্কুট, চানাচুর, জুস, কাচ, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন দ্রব্য। আমদানি করা হচ্ছে পাথর, মেশিনারিজ, ডাল, চাল, ভুট্টা, প্লাস্টিক দানা, আদাসহ বিভিন্ন পণ্য।
বাংলাবান্ধা সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলম জানান, মহামারী করোনার কারণে উচ্চ শুল্কহারের পণ্য আমদানি কমে গেছে। বন্দরের অবকাঠামো এখনো আধুনিক মানের হয়নি। ভালো অবকাঠামো গড়ে উঠলে আরও বেশি রাজস্ব আদায় হবে।
বাংলাবান্ধা আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি আব্দুল লতিফ তারিন ও সাধারণ সম্পাদক কুদরত ই খুদা মিলন জানান, দেশের একমাত্র সম্ভাবনাময় চারদেশীয় স্থলবন্দর বাংলাবান্ধা। এ বন্দরের তিনদেশের সাথে ভৌগলিক অবস্থান কাছাকাছি হওয়ার কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটন শিল্পের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। এই মহামারী করোনার মধ্যেও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে দ্বিগুণ রাজস্ব আয় হয়েছে। বন্দরের অবকাঠামোসহ সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির জন্য মহাপরিকল্পনা করা দরকার। এই বন্দর দিয়ে শত শত কোটি রাজস্ব আয় সম্ভব।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের সহকারি কমিশনার মবিন উল ইসলাম জানান, ‘করোনাকালীন স্থলবন্দরে সকল স্তরের কর্মকর্তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। কর্মকর্তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও এখানকার ব্যবসায়ীদের সহযোগিতার কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ রাজস্ব আদায় সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ভৌগলিক অবস্থানগত কারণেই এ স্থলবন্দরটি অপার সম্ভাবনাময়। ভবিষ্যতে চীনের সাথে বাণিজ্য কার্যক্রম শুরু হলে দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর হিসেবে স্থান পাবে এবং জাতীয় রাজস্ব আয়ে যোগ হবে নতুনমাত্রা।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা