কুড়িগ্রামের রাজারহাটের ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদে প্রায় এক মাসেও সহস্রাধিক দুস্থ-অসহায় ব্যক্তির নামে বরাদ্দকৃত ঈদুল আজহার ভিজিএফের চাল চেয়ারম্যানের গাফিলতির কারণে বিতরণ করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই সাথে আরো ১০টি প্রকল্পসহ নানা বিষয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ কর্মকারের বিরুদ্ধে সম্প্রতি অধিকাংশ ইউপি সদস্য অনাস্থা প্রস্তাব আনেন।
এছাড়া তারাসহ স্থানীয়রা তাকে অপসারণসহ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ অব্যাহত রেখেছেন। ফলে ইউনিয়নটিতে গত একমাস ধরে স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে। এদিকে, চেয়ারম্যানের নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ যাচাই করতে শুক্রবার রাজারহাট উপজেলা প্রশাসন একটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুরে তাসনিম তিন সদস্যের কমিটি গঠনের কথা স্বীকার করে জানান, তদন্ত কমিটি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তদন্ত করে তা জমা দিলে আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিগত ঈদুল আজাহা উপলক্ষে ঘড়িয়ালডাঙা ইউনিয়নে ৫ হাজার ২৯৪ জন দুস্থ মানুষকে ১০ কেজি করে ভিজিএফ’র চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ঈদের পূর্বে তালিকাভুক্তদের মধ্য থেকে মাত্র ৩ হাজার ৭০০ জনকে চাল বিতরণ করা হয়। অবশিষ্ট চাল দীর্ঘদিন গোডাউনে পড়ে থাকার পর ইউপি সদস্যগরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অভিযোগ প্রদান করে।
সেই পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার দ্বিতীয় দফায় আরো কিছু চাল বিতরণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করে ইউনিয়ন পরিষদ। কিন্তু এক হাজার ২৭৪ জন দুস্থ ব্যক্তির ভাগ্যে ঈদের ওই বরাদ্দকৃত ভিজিএফের চাল জোটেনি। এসব চাল এখন ইউনিয়ন পরিষদের খাদ্য গুদামে পড়ে রয়েছে বলে জানা যায়। অন্যদিকে, অধিকাংশ ইউপি সদস্যদের সাথে চেয়ারম্যানের অসামঞ্জস্যতার কারণে তার বিরুদ্ধে এনেছেন অভিযোগ।
তারা জানান, কাবিটা, কাবিখা, টিআর, ননওয়েজ, কর্মসৃজন, ভিজিএফ ও ভিজিডিসহ বিভিন্ন প্রকল্পে প্রায় অর্ধকোটি টাকার কাজের অনিয়মের অভিযোগ তুলে চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ কর্মকারের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও গত ৩১জুলাই একই দাবিতে এলাকাবাসী ও ইউপি সদস্যরা রাজারহাট-তিস্তা সড়কে মানববন্ধন করেন।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ কর্মকার জানান, পরিষদের সদস্যদের জন্য চাল বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ও তদন্ত কমিটির কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, তদন্ত চলছে এবং আইনগতভাবে যা হবে, তাই মেনে নেব।
বিডি প্রতিদিন/এমআই