ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় কিশোরদের নিয়মিত নামাজ আদায় ও নামাজের প্রতি ভালোবাসা জাগাতে উপহার ঘোষণা করা হয়েছিল। উপহারে কথা জানার পর টানা ৪০ দিন জামাতে নামাজে অংশগ্রহণ করে প্রথম পুরস্কার সাইকেল জিতে নিয়েছে ৪৫ জন শিশু-কিশোর। এ ছাড়া নামাজে অংশ নেওয়ায় দ্বিতীয় পুরস্কার বড় ব্যাগ পেয়েছে ৩০ জন শিশু-কিশোর এবং তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে ১৩ জন শিশু-কিশোরকে বিভিন্ন শিক্ষাসামগ্রী দেওয়া হয়েছে। মসজিদের চার বিচারককেও দেওয়া হয়েছে সম্মাননা ক্রেস্ট।
গতকাল শুক্রবার জুমার দিনে শৈলকুপার ত্রিবেনী ইউনিয়নের আনন্দনগর গ্রামে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ দাওয়াহ সার্কেলের পক্ষ থেকে এ উপহার দেওয়া হয়।
এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুজাহিদুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্ট্যাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. আক্তার হোসেন, দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্ট্যাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম ড. আ স ম শোয়াইব আহমাদ, আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান, ত্রিবেনী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আব্দুল লতিফ মণ্ডল, বঙ্গবন্ধু হলের ইমাম মওলানা মনিরুজ্জামানসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
বিচারক হিসেবে ছিলেন শেখপাড়া মসজিদের ইমাম মুফতি মাহফুজুর রহমান হাকিপুরী, আনন্দনগর কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম হাফেজ জুবায়ের আল হাদি, আনন্দনগর ইসলামনগর আনু মিয়া জামে মসজিদ ইমাম আবু মুসা ও পদমদী মসজিদের ইমাম আবু ইউসুফ ও আহ্বায়ক ছিলেন শাখওয়াত হোসেন।
অনুষ্ঠানটির আহ্বায়ক শাখওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমরা তাকবিরওয়ালাদের সঙ্গে টানা ৪০ দিনব্যাপী নামাজ আদায়ের জন্য মূলত এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলাম। বর্তমান তরুণ ছাত্রসমাজ গেমসে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে, মাদকের সঙ্গে এবং অন্যায়-অপরাধের সঙ্গে সম্পর্ক করে ফেলছে। ফলে মসজিদে আসছে না। তাদের মসজিদে আনার জন্য আমাদের এই আয়োজন। কারণ, নামাজ মানুষকে অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।’
আনন্দনগর গ্রামের বাসিন্দা কলেজ শিক্ষক আব্দুল লতিফ বলেন, ‘এটা অত্যন্ত ভালো উদ্যোগ। এটা সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে গেলে মসজিদের আসার আগ্রহ অনেক বাড়বে।’
প্রতিযোগিতার একজন বিচারক মুফতি মাহফুুজুর রহমান বলেন, ‘প্রথমে চিন্তা করেছিলাম শিশু-কিশোররা সকাল ৪টা-৫টাই উঠে পারবে কি না? কিন্তু সেই সময়ে উঠে তারা নজির সৃষ্টি করে ফজরের নামাজে অংশগ্রহণ করেছে। আমরা প্রথমে শুধু সাইকেল পুরস্কার দিতে চেয়েছিলাম। পরে তাদের আগ্রহ দেখে যারা তাকবির মিস করেছে তাদের অনন্য শিক্ষাসামগ্রী দিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ভেবেছি এলাকার কিশোরদের যদি নামাজের মাধ্যমে ইসলামের দিকে টেনে আনা যায়, তাহলে তারা পাপকাজে যুক্ত হবে না। একসঙ্গে এত কিশোর যদি নামাজ পড়ে, তাহলে আশপাশের মানুষের ভেতরও আগ্রহ বাড়বে। আগামীতে মধ্যবয়সী ব্যক্তিদের জন্য এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।’
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ