দেশ স্বাধীনের পর থেকে আজ অবধি আশ্বাসে আশ্বাসে বছরের পর বছর পার হলেও ইছামতি নদীর দুই পারের ৮ গ্রামের মানুষের বাশেঁর সাঁকোই ভরসা রয়ে গেল।
স্বাধীনতার এতদিন পরেও নির্বাচন এলে নেতা আর কর্মীদের মুখে শুধু আশ্বাসের ফুলঝুরি ফোটে। কিন্তু নির্বাচন শেষ হলে তাদের আর সাক্ষাত মিলে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। তাই আজও চিরিরবন্দরের নশরতপুর-আলোকডিহি গ্রামের মাঝামাঝি ইছামতি নদীর ওপর এই সেতু নির্মাণ ফাইলবন্দি। স্থানীয় এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি এখানে একটি সেতু নির্মাণের।
দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার নশরতপুর ইউপি কার্যালয়ের পূর্ব-উত্তর কোণে নশরতপুর ঈদগাঁহ মাঠ সংলগ্ন ইছামতি নদীতে একটি সেতু নির্মাণের অভাবে এলাকাবাসী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করছেন। বিশেষ করে বর্ষার সময়ে মানুষের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। সেতু যে কবে হবে, তা কেউ জানে না।
চিরিরবন্দর-খানসামা উপজেলার ৮টি গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার লোকের দীর্ঘদিনের দাবি এখানে একটি সেতুর। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিসহ সরকারের উচ্চ মহলে বারবার ধর্না দিয়ে আশ্বাস মিললেও সেতুর কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
সেতু না থাকায় যাতায়াত, উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারে আনা-নেয়া, অন্যান্য মালামাল বহনে ভোগান্তি ও অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হচ্ছে। তাদেরকে প্রায় দু’মাইল পথ ঘুরে আলোকডিহি হয়ে মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
চিরিরবন্দর উপজেলার নশরতপুর, চকগোবিন্দ, আলোকডিহি, ফতেজংপুর, উত্তর পলাশবাড়ী, খানসামা উপজেলার দুবলিয়া, গোয়ালডিহি, লালদিঘী, নীলফামারীর বড়ুয়াসহ ৮টি গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার লোকের যাতায়াতের পথ এ বাঁশের সাঁকো। জনগুরুত্বপূর্ণ ওই স্থানে আজও সেতু নির্মিত না হওয়ায় কৃষি সমৃদ্ব এই এলাকায় তেমন আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি।
নশরতপুর গ্রামের শিক্ষক রফিকুল ইসলাম, আলোকডিহি গছাহার গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ শিক্ষক বাবু নন্দীশ্বর দাস জানান, রাজারা তাদের জামিদারী তদারককালে অত্রাঞ্চলের মানুষের নদীপথে চলাচলের সুবিধার্থে ইছামতি নদী দিয়ে যাতায়াত করত। এলাকার প্রজাদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য এ নদীটি খনন করা হয়েছিল। কালের বির্বতনে নদীপথের গুরুত্ব কমে যাওয়ায় ইছামতি নদীটির গুরুত্ব কমে যায়। স্থলপথে যাতায়াতের গুরুত্ব বেড়ে যাওয়ায় এখানে একটি সেতু নিমার্ণের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল