নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট দিতে গিয়ে অধিকাংশ ভোটার ঝামেলায় পড়েছেন। অনেক কসরতের পরও কারও কারও আঙুলের ছাপ মিলাতে না পারায় ভোট দিতে পারেননি অনেক ভোটার।
আজ সোমবার দুপুর ২টার দিকে নিয়ামতপুর সদর ইউপির রূপনারায়নপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে আটটি বুথের সামনেই ভোটারদের দীর্ঘ সারি দেখা যায়। ভোট গ্রহণ চলে অত্যন্ত ধীর গতিতে। ভোট পড়ার হারও কম।
কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা বিজলী আদিবাসীপাড়া গ্রামের ভোটার সুবলা রাণী বলেন, দীর্ঘক্ষণ সারিতে দাঁড়িয়ে থাকার পর দুপুর ১২টায় তিনি ভোট কক্ষে ঢুকতে পারলেও তিনি ভোট দিতে পারেননি। অনেকবার চেষ্টা করেও তাও আঙুলের ছাপ মিলল না। ভোট লেওয়া লোকেরা বলল আমার আঙুল না কি ক্ষয়ে গেছে। ছয়-সাতবার মেশিনে আঙুল লাগিয়েও আমার নাম ও ছবি এলো না।
কেন্দ্রে আসা নওশাদ নামের এক ভোটার বলেন, সকাল সাড়ে ১০টায় তিনি ভোট দিতে এসেছেন। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে দুপুর সোয়া ১২টায় ভোটকক্ষে ঢুকতে পারলেও তিনি ভোট দিতে পারেননি। আঙুল নাকি ক্ষয় হয়ে গেছে। আঙ্গুলের ছাপ দিলে নাম আসে না।
আবার কেন্দ্রেই কথা হয় ৮০ বছরের বৃদ্ধা মুড়িহারী গ্রামের ছবিরণ বেওয়ার সাথে। প্রমাণ হিসেবে তিনি আঙুলে থাকা অমোচনীয় কালি দেখান। তিনি বলেন, ভোট তো দিলাম। অফিসার দেখিয়ে দেওয়ায় ভোট দিছি। ইভিএম পদ্ধতিতে আঙুলের ছাপ মেলাতে সমস্যা হচ্ছে বলে কেন্দ্রটির একাধিক ভোটার অভিযোগ করেন। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে তারা বিরক্ত।
প্রিজাইডিং কর্মকর্তা কাইয়ুম হোসেন জানান, দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রথম চার ঘণ্টায় রূপনারায়নপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৩০ শতাংশ ভোট পড়েছে। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত উপজেলার চন্দননগর, হাজিনগর ও সদর ইউনিয়নের ১০-১২টি কেন্দ্র ঘুরে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে ইভিএম ভোট দেওয়া নিয়ে নানা সমস্যার কথা জানা যায়।
ইভিএম ভোট দিতে ভোটারদের আঙুলের ছাপ না মেলা নিয়ে ভোটারদের সমস্যার বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জিয়াউল হক খান বলেন, আঙুলের ছাপ নিয়ে ভোটার পরিচিতি নিশ্চিত করা হয়। গৃহস্থালী ও কৃষি কাজ করতে গিয়ে অনেকের আঙুল ক্ষয়ে যায়। এ কারণে ইভিএম ছাপ দিতে গিয়ে ওই সব মানুষদের ছাপ মিলাতে গিয়ে সমস্যা হয়। বিশেষ করে বয়স্ক ও নারী ভোটারদের এই সমস্যাটা বেশি হয়। শুধু নিয়ামতপুরেই নয় সারাদেশেই এই সমস্যা হয়ে থাকে।
তিনি আরও জানান, এখানে ভোট শান্তিপূর্ণ হচ্ছে। ৬ষ্ঠ ধাপের ইউপি নির্বাচনে নিয়ামতপুরের ৮টি ইউনিয়নে শতভাগ ইভিএমের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। ৮ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ৩৯ জন, সংরক্ষিত নারী সদস্য ১০৬ ও সাধারণ সদস্য পদে ৩৪৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৯৭ হাজার ৮৪৭ জন।
বিডি-প্রতিদিন/ এ এস টি