মেহেরপুরের মুজিবনগরে দুই ভাইকে অস্ত্রের মুখে অপহরণের পর রাতভর নির্যাতন শেষে তিন লাখ বিশ হাজার টাকায় মুক্তি দিয়েছে অপহরণকারীরা। অপহরণের শিকার ওই দুই ভাই হলেন গোপালপুর গ্রামের সাহাবদ্দিন শেখ এর বড় ছেলে আব্দুল মালেক ও ছোট ছেলে শফিকুল ইসলাম।
গত ১ লা এপ্রিল শুক্রবার রাত ৯ টার দিকে মুজিবনগর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের হাতিরখাল নামক মাঠ থেকে তাদের অপহরণ করা হয়। পরের দিন ভোরের দিকে তিন লাখ বিশ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে তাদের মুক্ত করে আনে পরিবার।
অপহরণের বিষয়ে আব্দুল মালেক বলেন, আমি ও আমার ছোট ভাই শফিকুল ইসলাম পার্শ্ববর্তী হাতিরখাল মাঠে কচুর জমিতে সেচ দিচ্ছিলাম। রাত ৯ টার দিকে আমাদের সেচ পাম্প হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। ছোট ভাই শফিকুল পুনরায় সেচ পাম্প চালু করতে গেলে আগে থেকেই ওৎ পেতে থাকা অপহরণকারীরা শফিকুলকে বেঁধে ফেলে। পরে আমি দেখতে গেলে আমাকেও বেঁধে ফেলে। হাত বাঁধা অবস্থায় আমাদের নিয়ে যাওয়া হয় চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার ভ্যাদাগাড়ি নামক একটি মাঠে। সেখানে আরও ৫ জন তাদের সাথে যুক্ত হয়, তারা ১৪ জনে দাঁড়ায়। এরপর তারা আমাদের বলে, ১০ লাখ টাকা দিতে হবে না হলে মেরে ফেলা হবে। আমরা পরিবারকে টাকার জন্য বলি। পরে পরিবারের লোকজন প্রায় ৪ ঘণ্টা চেষ্টা করে ২ লাখ টাকা জোগাড় করে। ২ লাখ দিতে চাইলে আমাদের মারধর শুরু করে এবং শফিকুলকে জবাই করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। আমি নিষেধ করলে আমাকেও মারধর শুরু করে। পরে আমি আবার বাড়িতে মোবাইল করলে তারা ধার করে আরও ১ লাখ ২০ হাজার টাকা জোগাড় করে। তারপর অপহরণকারী বলে টাকা আনতে। তাদের কথামত আমার চাচাতো ভাই বজলুর রহমান ও ওমর ফারুক দামুড়হুদা উপজেলার নির্জন একটি মাঠে অপহরণকারীদের কাছে টাকা পৌঁছে দেয়। পরে সেই রাতেই আমাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। আমরা বাড়ি চলে আসি। আমরা কাওকে চিনি না তাই কারও বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করতে পারছিনা।
মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেহেদি রাসেল জানান, আমরা কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে অপহরণের শিকার ওই ব্যক্তিদের বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষটি ভালো করে খোঁজ খবর নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আমি রাত ১০টার দিকে ঘটনাটি শুনতে পাই। ঘটনা শুনে তাদের বাড়িতে গিয়ে আমরা সবাই মিলে টাকা জোগাড় করতে শুরু করি। পরে অপহরণকারীরা টাকা হাতে পেলে রাত তিনটার দিকে আব্দুল মালেক ও তার ভাই শফিকুল ইসলামকে ছেড়ে দেয়। ভোর রাতে তারা গোপালপুর নিজ বাড়িতে ফিরে আসে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল