আসুন, বসুন, বই পড়ুন। নিন আপনার চা। বসা ফ্রি। বই ফ্রি। বই পড়লে চা ফ্রি। লাইব্রেবির সামনে এসব কথা কাগজে লেখা। এটি কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় ভিক্টোরিয়া কলেজ একাদশ শাখার রোড এলাকার দৃশ্য এটি। লিপিকা লাইব্রেরি ব্যতিক্রম ঘোষণা দিয়ে পাঠকদের মাঝে আগ্রহ সৃষ্টি করেছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে লাইব্রেরির সামনে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন শিক্ষার্থী প্লাস্টিকের টুলে বসে পড়ছেন। লাইব্রেরির পক্ষ থেকে তাদের লাল মশলা চা পরিবেশন করা হচ্ছে। এখানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণির পাঠকের ভিড় থাকে।
কুমিল্লা কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী উম্মে হাবিবা ফাইজা জানান, বাসা নগরীর পশ্চিম মাথা বাগিচাগাঁওয়ে। কলেজ ছুটির পরে কোচিং থাকে। মাঝের সময়টুকু এখানে বসি। ক্লাসের বা গল্পের যে কোন বই পড়তে পারি। সাথে বিনামূল্যে চাও পাই। এখানে সময় কাটাতে ভালো লাগে।
ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্র আবু সুফিয়ান রাসেল বলেন, এটি একটি ভালো উদ্যোগ। মানুষ এখানে বসে বসে বই পড়ে, দেখে কিনতে পারে। কুমিল্লায় এটি নতুন আইডিয়া। এতে পাঠক বাড়বে বলে আশা করছি।
তরুণ আইনজীবী নাজমুল বারী চৌধুরী বলেন, সময় কাটানোর জন্য বসে পড়ার সুযোগ নগর জীবনে তেমন নেই বললেই চলে। সাথে বিনামূল্যে চা সত্যি উপভোগ্য বিষয়। প্রায় বিকালে এখানে বিভিন্ন প্রকার বইয়ের স্বাদ নিতে চলে আসি।
লিপিকা লাইব্রেরির স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান জানান, এটি আমাদের পারিবারিক ব্যবসা। ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে অনার্স, মাস্টার্স পাশ করেছি। ছাত্র থাকাকালীন সময়ে দেখেছি, শিক্ষার্থীরা ক্লাসের গ্যাপে কোথাও বসার জায়গা নেই। অনেকে বিভিন্ন মার্কেটে ঘুরে সময় কাটায়। এছাড়া তরুণ প্রজন্ম মোবাইল ফোনে আসক্ত। তাদের বইমুখী করতে আমাদের এ উদ্যোগ।
তিনি বলেন, লাইব্রেরির সামনে পুরুষ ও নারী পাঠকদের জন্য পৃথক দু'টি টেবিল নির্ধারণ করা আছে। মোট ২৪ জন বসতে পারেন। বিনামূল্যে চা খেতে পারেন। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যে কোন সময় পাঠক বই পড়তে পারবেন। ক্রয় করতে হবে না। কেউ চাইলে বইয়ের বিশেষ অংশ ছবি তুলেও নিতে পারবেন। পাঠকের জন্য বাংলা ও ইংরেজি অভিধান রয়েছে। আমাদের নিকট ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা, ধর্ম, রাজনীতি, গল্প, উপন্যাসসহ স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস ভিত্তিক বইও রয়েছে।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কবি ড. সফিকুল ইসলাম বলেন, মানুষ বই পড়া ছেড়ে দিচ্ছে। বই পড়ার আগ্রহ সৃষ্টি করার এই পদ্ধতিতে নতুনত্ব আছে। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। এটি একটি পরিদর্শন করবো।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন