বিশ্বকাপ ফুটবল খেলার শুরুতেই বিশ্বকাপ জ্বরে কাঁপছে সারা পৃথিবী। খেলায় নিজ দেশের অংশগ্রহণ না থাকলেও ফুটবল প্রিয় বাংলাদেশিরাও সেই উত্তেজনায় গা ভাসিয়েছে। আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালিসহ নানা দেশের ভক্তরা প্রিয় দল নিয়ে করছেন মাতামাতি। ফুটবল উৎসবের উন্মাদনায় পাবনায় নিজ হাতে ফিফা বিশ্বকাপ ট্রফির রেপ্লিকা তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন আর্জেন্টিনা ভক্ত স্কুলছাত্র সাকিবুল ইসলাম সাকিব। ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ ট্রফির মতো রেপ্লিকাটি দেখতে ছুটে আসছেন আশপাশের গ্রামের ফুটবলপ্রেমীরা।
পাবনার সুজানগর উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের তায়নুল ইসলামের ছেলে সাকিব সুজানগর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।
সাকিব জানান, কাগজ, আঠা, রঙের সংমিশ্রণে প্রায় এক বছরেরও বেশি সময়ের পরিশ্রমে ট্রফিটি তৈরি করেছেন তিনি। মা সালমা খাতুন শখের বসে কাগজ, কাঠ, কাপড় দিয়ে শৌখিন ফুলদানি ও শিল্পকর্ম তৈরি করেন। তার দেখাদেখি সাকিবের মনেও বিশ্বকাপ ফুটবল ট্রফি তৈরির ইচ্ছা জাগে। ইন্টারনেট থেকে ছবি ও নকশা সংগ্রহ করে লেগে পড়েন বিশ্বকাপ ট্রফি তৈরিতে। একপর্যায়ে সফল হলে এলাকায় হইচই পড়ে যায়।
সাকিব আরো জানান, ফুটবল বিশ্বকাপে সে আর্জেন্টিনার সমর্থক। তার প্রিয় দল এবার যেন ট্রফি জিতে নেয়, সে আশা তার। গ্রামের আর্জেন্টিনা সমর্থকদের উজ্জীবিত করতেই দিনরাত পরিশ্রম করে ট্রফির রেপ্লিকা তৈরি করেছেন তিনি। ট্রফিটি সত্যিকারের বিশ্বকাপে ট্রফির মতোই দেখতে হওয়ায় খুবই খুশি তিনি।
সম্প্রতি ভবানীপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সাকিবের বাড়িতে ভিড় জমিয়েছে আর্জেন্টিনা ভক্ত একদল কিশোর। কিছুক্ষণ পরে বিশ্বকাপ ট্রফির রেপ্লিকা নিয়ে বের হয়ে আসেন সাকিব। শুরু হয়ে যায় আর্জেন্টিনার সমর্থনে উচ্ছ্বসিত শ্লোগান।
সাকিবের বড় ভাই রাকিব জানান, বিশ্বকাপের রেপ্লিকা তৈরি করার শুরুর দিকে ঠিকঠাক গুছিয়ে উঠতে পারছিল না সে। একপর্যায়ে উৎসাহ হারিয়ে ফেলে কাজ বন্ধ করে দেয়। তখন আমি তাকে ইন্টারনেটের সহযোগিতায় নকশা সংগ্রহ করে দেই। কঠোর পরিশ্রমে সে ট্রফির রেপ্লিকা তৈরিতে সফল হওয়ায় আমি খুবই আনন্দিত।
রাকিব বলেন, আমি ব্রাজিলের সাপোর্টার। সাকিব আর্জেন্টিনার সমর্থকদের নিয়ে ট্রফি হাতে মিছিল করে বেড়াচ্ছে। এ নিয়ে আমাদের দুই ভাইয়ের হাসি তামাশা চলছে। আমি চাই সত্যিকার অর্থেই বাংলাদেশের ফুটবল দল, বিশ্বকাপ ট্রফি বাংলাদেশে নিয়ে আসুক।
সাকিবের প্রতিবেশী সজিব ইসলাম বলেন, সাকিবের তৈরি বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়ে আমাদের এলাকায় হইচই পড়ে গেছে। দূর দূরান্তের মানুষ দেখতে আসছে। আমাদের খুবই আনন্দ হচ্ছে। যেনো সত্যিকারের ফুটবল বিশ্বকাপ আমাদের গ্রামে চলে এসেছে।
সুজানগর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীন বলেন, বাঙালি ফুটবলপ্রেমী জাতি। গ্রামাঞ্চলে বিশ্বকাপ ফুটবলের আনন্দ মাসজুড়ে উৎসবে রূপ নেয়। সাকিবের বানানো বিশ্বকাপ ট্রফির রেপ্লিকা সে আনন্দকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। সময় করে আমিও ট্রফিটি দেখতে যাবো।
বিডি প্রতিদিন/এমআই