নাটোরের গুরুদাসপুরে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখা কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ৬ জন আহত হয়েছেন। আহতদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা আনুমানিক ৬ টার সময় উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের মিল্কি বাজারে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন- সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সামসুল হকের ভাই শাহিন, চাচাতো ভাই আত্বাব আলী ও ছফর মোল্লা। অপরদিকে আহতরা হলেন রাজ্জাক আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম, সামাদ হোসেন ও ছোট ভাই আবু বক্কর।
জানা যায়, মিল্কি বাজারের দক্ষিণ পার্শ্বে চাপিলা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান সামসুল হকের ভাই, ভাতিজা ও তার সমর্থকরা তাদের নিজস্ব জায়গার ওপর প্রজেক্টরের মাধ্যমে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখে আসছে। অপরদিকে বাজারের উত্তর পার্শ্বে একই এলাকার অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক রাজ্জাক আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম, সামাদ হোসেন ও তার সমর্থকরা প্রজেক্টরের মাধ্যমে খেলা দেখছিল। উভয় পক্ষই আর্জেন্টিনার সমর্থক।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সামসুল হক বাজারে চা খেতে গেলে তার সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পরেন সামাদ ও সাইফুল। দ্বন্দ্বের একপর্যায়ে সামসুল হকের প্রজেক্টরে খেলা পরিচালনা করতে নিষেধ করে সামাদ। তর্ক বিতর্ক করতে করতে দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলেই উভয়পক্ষের ৬ জন গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি করেন।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সামসুল হক জানান, আমার ছেলে, ভাই,ভাতিজারা মিল্কি বাজারের দক্ষিণ পার্শ্বে আমাদের নিজস্ব জায়গার ওপর একটি ব্যাডমিন্টন মাঠ তৈরি করে। সেখানে একটি প্রজেক্টরও সেট করা হয়। প্রজেক্টরের মাধ্যমে গ্রামের অনেক মানুষ বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা উপভোগ করে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাজারে চায়ের দোকানে আমি চা পান করছিলাম। সেই মুহূর্তে প্রতিবেশী রাজ্জাক মাস্টারের ছেলে সামাদ ও সাইফুল আমাকে এসে আমাদের প্রজেক্টর এবং ব্যাডমিন্টন খেলার মাঠ বন্ধ করতে বলেন। আমি তাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করলে আমাকে বলে কথা বললেই মারধর করা হবে। এক পর্যায়ে বাজারের মধ্যে তর্ক বিতর্ক শুরু হয় সাইফুল ও সামাদের সঙ্গে। পরে আমার কাছে আমার ছোট ভাই ও দুই চাচাতো ভাই এগিয়ে আসলে অতর্কিতভাবে সাইফুল, সামাদ ও তার সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্র চাইনিজ কুড়াল, হাসুয়া, লোহার রড দিয়ে মারপিট শুরু করলে উভয় পক্ষের মধ্যে একটা সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। পরে গুরুতর অবস্থায় দুই চাচাতো ভাইকে রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আর আমার ছোট ভাই মোতালেবকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে রাখা হয়েছে।
এ দিকে সাইফুল ও সামাদের বাবা রাজ্জাক আলী জানান, অনেক আগে থেকে আমার ছেলেরা প্রজেক্টরের মাধ্যমে গ্রামের মানুষকে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখায়। বাজারের মাত্র ১০০ ফিট দূরত্বে দুইটি প্রজেক্টর চললে বিষয়টি খারাপ দেখায়। এ নিয়ে বাজারে আগে একটি শালিসও হয়েছে। শালিসে যে কোন একটি প্রজেক্টর চালানোর রায় হয়েছিল। এ জন্য আমার ছেলেরা তাদেরকে বুঝাতে গিয়েছিল। হঠাৎ সামসুল হকের ভাই ভাতিজারা আমার ছেলে ও সমর্থকদের অপর অতর্কিত হামলা চালায়। ঘটনাস্থলেই আমার দুই ছেলে ও ছোট ভাই গুরুতর আহত হয় । তাদের সবাইকে রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল মতিন জানান, এ সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ এখনো পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল