ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে শুরু হয় এ সংঘর্ষ। দফায় দফায় চলে হামলা-পাল্টা হামলা ও সংঘর্ষ। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সদরপুরের কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন ফকির ও বর্তমান চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামান তিতাসের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এ বিরোধের জের ধরে গত দুই বছরে খুন হয় তিনজন। আহত হয় কয়েকশ ব্যক্তি। তাদের মধ্যে পঙ্গুত্ববরণ করেছে ১০/১২ জন।
সম্প্রতি বাজারের দোকান দখলকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে মঙ্গলবার সকালে উভয়পক্ষের কয়েকশ লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কৃষ্ণপুর বাজারসহ আশপাশে উপস্থিত হয়। সকাল ১০টার দিকে উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে প্রথমে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ বেধে যায়। পাল্টাপাল্টি হামলার সময় কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ অফিস ও ৪/৫টি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।
সংঘর্ষ চলাকালীন পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। পরে ৭ রাউন্ড রাবার বুলেট ও কয়েক রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। পরে ঘটনাস্থল থেকে সদরপুর থানা পুলিশ সাবেক চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন ফকিরকে আটক করে। একইসঙ্গে আকতারুজ্জামান তিতাসের সমর্থক শুকুর বেপারীকে আটক করা হয়। বর্তমানে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।
বর্তমান চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামান তিতাস জানান, সাবেক চেয়ারম্যান বিল্লাল ফকিরের কয়েকশ লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ ও আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা করে। এসময় তারা ইউনিয়ন পরিষদের আসবাবপত্র ও বঙ্গবন্ধু এবং প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর করে। হামলাকারীরা ইউনিয়ন পরিষদে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়।
সাবেক চেয়ারম্যান বিল্লাল ফকিরের ভাই জানান, বাজারে আমাদের একাধিক দোকান রয়েছে। সেই দোকানগুলো তিতাস চেয়ারম্যান দখলের চেষ্টা করে। আমরা বাধা দিলে সংঘর্ষ হয়।
সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত গোলদার জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করেছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই