মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার আগকলিয়া গ্রামের মাতব্বরের আদেশে একঘরে হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন হানিফ আলীর পরিবার। পারিবারিক একটি রাস্তার বিষয়ে মিমাংসা না হওয়ায় মাতব্বরা এই পরিবারটিকে একঘরে করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। বন্ধ করে দেওয়া হয় রান্না ঘর ও টয়লেটে যাবার রাস্তা। গত ১০ মে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তাদের আদেশে আরো বলা হয়, কেউ যদি হানিফ আলীর পরিবারের সাথে যোগাযোগ রাখে তাহলে তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। বাধ্য হয়ে পরিবারটি তার এসএসসি পরিক্ষার্থী মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নিয়েছে। অবশেষে গতকাল ১২ জনকে আসামি করে দৌলতপুর থানায় অভিযোগ করেন হানিফ আলীর স্ত্রী নাছিমা আক্তার।
অভিযুক্তরা হলেন মো. আব্দুল বাতেন কাজী, মো. হাশেম, মো. মুক্তার, ফুলবাহার, মোছাম্মত মুক্তা, ইউনুছ কাজী, পাশান কাজী, শামসুল কাজী, হাসান কাজী, হারেজ কাজী, নজরুল কাজী ও আনছের কাজী।
বাদী নাছিমা আক্তার বলেন, স্বামী ঢাকা একটি ছোট চাকরি করেন ছুটি পায় না। পারিবারিক রাস্তার বিষয়ে স্বামী আসতে পারেনি, তারপরেও আমাকে মাতব্বররা একঘরে করে রাখে। পাশের দোকানদারও ভয়ে সদাই দেয় না। অবশেষে আমার এসএসসি পরিক্ষার্থী মেয়েকে নিয়ে আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নিয়েছি।
এসএসসি পরিক্ষার্থী তামান্না ইসলাম রিনতি বলেন, চাচার পক্ষের লোকজন আমাদের টয়লেট, রান্না ঘর বন্ধ করে দিয়েছে। পাশের বাড়ির দোকানদার আমার কাছে সদাই বিক্রি করেননি। আমরা বাধ্য হয়ে পরের বাসায় আশ্রয় নিয়েছি। সরেজমিনে দেখা যায় ভুক্তভোগীর রান্নাঘর ও টয়লেটে যাবার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সদাই না দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে দোকানদার বলেন, সদাই দেওয়া নিষেধ।
এ বিষয় জানতে চাইলে মাতব্বর ইউনুছ কাজী ও পাষান কাজী বলেন, আমাদের কথা অমান্য করায় তার বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, তাদের সাথে যারা যোগাযোগ করবে তাদের ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। এ রায় আইনসিদ্ধ হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ইউনুছ মাতব্বর বলেন, আগে সমাজ পরে আইন।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম মোল্লা বলেন, অভিযোগ পেয়েছি উভয় পক্ষকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। যেহেতু বিষয়টি পারিবারিক, শান্তির লক্ষে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল