বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার ১২টি খাল সংস্কারের অভাবে প্রতিবছর ২১ কোটি টাকার ফসল কম উৎপাদন হচ্ছে। এসব ফসলের মধ্যে রয়েছে আউশ, আমন, বোরো, ভূট্টা, সূর্যমুখি, সরিষা ও বিভিন্ন ধরণের সবজি। এক যুগের অধিক সময় ধরে খালগুলো বেদখল, হাজামজা, কচুরিপনা আটকে থাকা ও পানি প্রবাহ না থাকায় ১১টি ইউনিয়নে খাল সংলগ্ন আড়াই হাজার একর জমিতে শতভাগ ফসলহানির ঘটনা ঘটছে।
উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ১১টি ইউনয়নে খালের সংখ্যা বেশি। এ ইউনিয়নগুলোর মধ্য হতে প্রবাহমান সরকারি ২৫টি খাল খনন, দখলমুক্ত ও সংস্কার করা জরুরি। এর মধ্যে ফসল উৎপাদনের বিষয় বিবেচনায় সম্প্রতি উপজেলা কৃষি দপ্তর ১১টি খাল সংস্কারের জন্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিকট লিখিতভাবে অবহিত করেছেন। ৫ মিটার চওড়া এ খালগুলোর দৈর্ঘ্য (সংস্কার প্রয়োজন) প্রায় ২৭ কিলোমিটার। জনগুরুত্বপূর্ণ এসব খালের মধ্যে রয়েছে, দক্ষিণ তেলিগাতী খাল, শুভরাজকাঠি খাল, বুড়ির বাড়ির খাল, কালিকাবাড়ি খাল, শকুন্তলা খাল, দয়ার খাল, মাজের খাল, ঋষির বাসা খাল, জব্বর আলী খাল, মিয়ার খাল, কাটা খাল উল্লেখযোগ্য।
কৃষি দপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, আপাতত ১১টি খাল খনন ও সংস্কার করা গেলে পুনরায় ফসলি জমিতে পরিণত হবে ২ হাজার ৩০০ একর জমি। এসব জমিতে আউশ, আমন, বোরো, সূর্যমুখিসহ নানা ধরণের অর্থকরি ফসল ফলবে। যার বাৎসরিক অর্থমূল্য ২১ কোটি টাকা। সময়ের পরিবর্তনে অনেক খাল ভরাট হয়ে অস্তিত্ব হারিয়েছে। অপরদিকে, প্রভাবশালী ঘের মালিকরা তাদের সুবিধামত কিছু খালে বাঁধ দিয়ে দখল করে নিয়েছেন। দখলে থাকা খালগুলো উদ্ধারের জন্য উপজেলা পরিষদের আইন-শৃংখলা সভায় বহুবার সিদ্ধান্ত হলেও তা অজ্ঞাত কারনে বাস্তবায়তি হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকাশ বৈরাগী বলেন, কৃষি নির্ভর এ উপজেলার অনেক জনগুরুত্বপূর্ণ খাল সংস্কারের অভাবে কোন উপকারে আসছেনা। ফসল উৎপাদন কমে গেছে। অনেক খাল কচুরিপনায় ভরে রয়েছে। কিছু খাল তদারকির অভাবে বেদখল অবস্থায় আছে। এর মধ্যে ১১টি খাল দ্রুত পুনঃখননের জন্য কৃষি বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিকট লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে।
জরুরিভিত্তিতে খননের জন্য দেওয়া খালগুলোর দৈর্ঘ প্রায় ২৭ কিলোমিটার। চওড়া ৫ মিটার। এই ২৭ কিলোমিটার খাল খনন করা হলে মোরেলগঞ্জে বছরে ২১ কোটি টাকার ফসল উৎপাদন বাড়বে।
বিডি প্রতিদিন/এএ