কৃষি নির্ভর জেলা দিনাজপুরের বেশিরভাগ মানুষ কৃষি কাজ ও চাষাবাদের সাথে সম্পর্ক রেখে জীবিকা নির্বাহ করে। ফলে পরিবারের আয়ের প্রধান উৎস কৃষি। কিন্তু যুগের সাথে তাল মিলাতে সময় ও খরচ বাঁচাতে নির্ভরতা বাড়ছে কৃষি যান্ত্রিকরনে। আর প্রযুক্তির প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে বীরগঞ্জসহ বিভিন্ন উপজেলার বেশির ভাগ কৃষক কৃষিতে ব্যাপক উন্নতি সাধন করেছে। প্রযুক্তির সহায়তায় কৃষিকাজ, চাষাবাদ, ফসল রোপণ, মাড়াইসহ যাবতীয় কাজ ঝামেলা মুক্তভাবে অল্প সময়ে করছে। তাই এখন আমন ধান কাটতে জেলার বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিক পর্যাপ্ত থাকলেও কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহারে বেকার হয়ে পড়েছে কৃষি শ্রমিকরা।
দেখা যায়, বীরগঞ্জ উপজেলার মোহনপুর, পলাশবাড়ী ভোগনগর, নিজপাড়া, মরিচা, সুজালপুর, শতগ্রামসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে আমন ধান কাটতে এলাকায় শ্রমিক পর্যাপ্ত থাকলেও বেশির ভাগ কৃষক হারভেষ্টার মেশিন দিয়ে আমন ধান কাটা-মাড়াই করে ঘরে তুলছেন।
এসব এলাকার মানুষের কাছে এখন ধান মাড়াইয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে হারভেস্টার মেশিন। যার প্রভাবে ঝড়, বৃষ্টির শঙ্কায় ধানচাষীরা দ্রুত ইরি-বোরো, আমন ধান কেটে, বস্তাবন্দি, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাসহ কোন ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে না। ফলে অর্থ ও সময় দুটোই সাশ্রয় হচ্ছে কৃষকদের। এ অবস্থা জেলার বিভিন্ন উপজেলায়।
এ ব্যাপারে বীরগঞ্জের মোহনপুর ইউনিয়নের কৃষক রেজাউল ইসলাম বলেন, এইবার আগাম ২ একর আগাম আমন ধান চাষ করেছি। হারভেস্টার মেশিন দিয়ে সব ধান কাটা-মাড়াইয়ে ঘরে তুলছি। কারণ দিনমজুর কৃষি শ্রমিকরা ১ একর ধান কেটে দিতে ১০ হাজার টাকা দিতে হয় এবং এই ধান মাড়াই, বস্তাবন্দি, পরিষ্কারসহ অনেক ঝামেলা। কিন্তু হারভেষ্টার মেশিনে ১ একর ধান মাড়াইয়ে খরচ হচ্ছে ৬ হাজার টাকা এবং বস্তাবন্দিসহ কম সময়ে ঝামেলা ছাড়া ধান মাড়াই করতে পারছি। এতে সময় ও টাকা বেঁচে যাচ্ছে।
অপরদিকে কৃষি শ্রমিক রফিকুল ইসলামসহ কয়েকজন জানান, আমাদের এলাকায় ধান কাটা মেশিন আসায় এই বার আগাম আমন ধান কাটতে পারি নাই। আমিসহ দলে ২০ জন কাজ করি। সবাই বসে আছি কোন কাজ পাচ্ছি না, আয় নেই। এতে পরিবার নিয়ে কষ্টে দিন পার করছি। অথচ বছর খানেক আগেও এই সময়ে কাজ করে অনেক টাকা আয় করেছি।
বিডি প্রতিদিন/এএ