ঢাকা থেকে নির্দিষ্ট কর্মসূচি দিয়ে সাংবাদিক সন্তানদের শিক্ষা সহায়তা বৃত্তির চেক বিতরণে ময়মনসিংহে যান বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম. আব্দুল্লাহ। পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি থাকার পরও দীর্ঘ এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের (ডিসি) সাক্ষাৎ মেলেনি। এমন অসৌজন্যমূলক পরিস্থিতিতে কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়েই সহায়তা বৃত্তির চেক বিতরণ করে ঢাকায় ফেরেন এম. আব্দুল্লাহ। এ নিয়ে সাংবাদিক মহলে ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সোয়া ১টার দিকে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে ২১ জন সাংবাদিক সন্তানদের মাঝে চেক বিতরণ করা হয়।
এ সময় সাংবাদিক ইউনিয়ন ময়মনসিংহের সভাপতি এম. আইয়ুব আলীর সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় এই চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম. আব্দুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সহসভাপতি খাইরুল বাশার।
অনুষ্ঠানে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে এম. আব্দুল্লাহ বলেন, রাষ্ট্রীয়ভাবে সাংবাদিক সন্তানদের শিক্ষা সহায়তা দেওয়া হয়। কিন্তু ময়মনসিংহে এসে আমরা ভিন্ন অভিজ্ঞতা পেলাম। বাংলাদেশে আমলা শ্রেণি পর্যায়ের মধ্যে যারা জেলায় দায়িত্ব পালন করেন তারা নিজেদের রাজা মনে করেন, আর যারা জেলায় বসবাস করেন তারা সবাই প্রজা। এই মানসিকতা পরিবর্তন না হলে আমরা যতই পরিবর্তনের গল্প শোনাই না কেন, এটার কোনো উন্নতি হবে না।
আমরা সময় নির্ধারণ করে ঢাকা থেকে নির্দিষ্ট কর্মসূচি দিয়ে যেভাবে করতে হয়, সেভাবে করেছি এবং এসেছি। কিন্তু এখানে এসে এক ঘণ্টা বসে থাকার পরেও ন্যূনতম সৌজন্যতা প্রদর্শন করা হয়নি। সিভিল সার্ভিসে ঢোকার সময় যে সভ্যতা, ভদ্রতা শেখানো হয় এক্ষেত্রে আমরা ব্যত্যয় দেখেছি। এই দুর্ভাগ্যজনক অভিজ্ঞতা আমাদের যেন আগামী দিনে না হয়, সে ব্যাপারে ভাবতে হবে। সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক কীভাবে হস্তান্তর হবে, কাঠামো কী হবে। আমি আপনাদের (সাংবাদিক) ডেকে এনেছি এজন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।
তিনি আরও বলেন, আজকে যারা চেক পেয়েছেন আগামী বছর তারা ভালো ফলাফল করে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টে জমা দিলে তাদের জন্য এই শিক্ষা বৃত্তি অব্যাহত থাকবে। ফলাফল ভালো হলে মাস্টার্স পর্যন্ত চলবে এই বৃত্তি কার্যক্রম। তবে নতুন করে যারা আবেদন করতে চান তাদেরকে আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আগামী ডিসেম্বরে এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হবে। বছরে একবার এই বৃত্তি দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে আসন্ন রমজানে সাংবাদিকদের জন্য একটি ইফতার উপহারের প্রস্তুতি চলছে, ছোট আকারে তালিকা পেলে আমরা ইফতার পৌঁছানোর চেষ্টা করব। এ ছাড়া সাংবাদিকদের অন্যান্য যেসব সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা আছে, সেভাবে আবেদন করলে তারও ব্যবস্থা হবে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মুফিদুল আলমের ব্যবহৃত সরকারি মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম