শনিবার, ২১ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

ভারতের মিনি নির্বাচন

মমতার জয়ে তিস্তার জট খুলুক

ভারতের পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন বিজেপি তাদের অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে সক্ষম হয়েছে। অপরিণামদর্শী ভূমিকার কারণে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস পড়েছে আরও কোণঠাসা অবস্থায়। পাঁচটি রাজ্যের মধ্যে দুটি বাংলাদেশের লাগোয়া। এর একটি পশ্চিমবঙ্গ। যেখানে আবারও ক্ষমতায় এসেছে মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস। মমতার বিরুদ্ধে বামপন্থিরা কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে লাভবান হওয়ার বদলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ভারতের রাজনীতিতে অদূর ভবিষ্যতে এ ধরনের জোট গড়ার সম্ভাবনা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হলো। নির্বাচনে বামপন্থিরা কংগ্রেস প্রার্থীদের ভোট দিলেও কংগ্রেসের ভোট বামের বাক্সে পড়েনি বললেই চলে। এ মোনাফেকি আচরণ প্রকারান্তরে তৃণমূল কংগ্রেসকেই সুবিধা করে দিয়েছে। আগের চেয়ে বেশি আসনে জিতে ক্ষমতায় ফিরেছে তারা। মমতার জয় বাংলাদেশের জন্য স্বস্তি বয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ জয় বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির জট খুলে দেবে এমনটিই আশা করছে বাংলাদেশের মানুষ। বাংলাদেশের আরেক প্রতিবেশী রাজ্য আসামে প্রথমবারের মতো বিজেপি জোট জয়ী হয়েছে। কংগ্রেসের একলা চলো নীতি তাদের কপাল পুড়িয়েছে। কেরালায় প্রতিটি নির্বাচনে ক্ষমতার বদল ঐতিহ্যের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবার সেখানে কংগ্রেস জোটকে হারিয়ে ক্ষমতায় এসেছে বামজোট। তামিলনাড়ুতে বিজেপির মিত্র দল এআইডিএমকে জিতেছে বেশ ভালো ব্যবধানে। কংগ্রেস কিছুটা অস্তিত্ব ধরে রাখতে পেরেছে কেন্দ্র শাসিত ক্ষুদ্র রাজ্য পন্ডিচেরিতে। ভারতের মিনি নির্বাচন প্রমাণ করেছে ভোটদাতারা উন্নয়ন চায়। নিছক বিরোধিতায় যে চিঁড়ে ভিজে না তা তারা জানিয়ে দিয়েছে। মমতার শাসন নিয়ে সমালোচনা থাকলেও উন্নয়নের ক্ষেত্রে গত পাঁচ বছর ছিল সুসময়। সংখ্যালঘু মুসলমানদের আস্থা ধরে রাখতে তারা সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে। বিজেপির আসাম জয়ের পেছনেও মুসলিম ভোটের একাংশের সমর্থন ভূমিকা রেখেছে। ভারতের ঐতিহ্যবাহী দল কংগ্রেসের জন্য মিনি নির্বাচন অশনি সংকেত বলে বিবেচিত হতে পারে। রাজনীতিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভুল একটা দলকে কতটা বিপর্যস্ত করতে পারে কংগ্রেস তার সাক্ষী।  এ থেকে সবারই শিক্ষা নেওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর