রাজধানীতে ঈদকে সামনে রেখে অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর বাস-লঞ্চ টার্মিনাল ও রেলওয়ে স্টেশনসহ জনাকীর্ণ অন্তত শতাধিক পয়েন্টে অজ্ঞান পার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের পাঁচ শতাধিক সদস্য সক্রিয় রয়েছে। চেতনানাশক মেশানো জুস, ডাবের পানি, খেজুর, ঝাল-মুড়ি, শরবতসহ বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করছে অপরাধচক্রের সদস্যরা। গেল ছয় মাসে কেবল চেতনানাশক উপাদান মিশ্রিত ডাবের পানি পান করেই অজ্ঞান হয়ে মারা গেছেন দুজন। গেল ঈদ ও দুর্গাপূজায় ঢাকা মহানগরীতে পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজন ছিনতাইকারী-অজ্ঞান পার্টির সদস্যকে গ্রেফতার করেছিল। এতে কিছু দিন এই চক্রের দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে এর কিছু দিন পর থেকেই শুরু হয় তাদের কার্যক্রম। বিশেষ করে ঈদকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি বেড়েছে অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য। এ চক্রের সদস্যদের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছে সহজ সরল খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। গণপরিবহনে যাত্রীবেশে পথচারী কিংবা বিভিন্ন পেশার ছদ্মবেশে তত্পরতা চালায় অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা। প্রায় প্রতিদিনই মহানগরীর গুলিস্তান, তিন বাস টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশন, লঞ্চ টার্মিনালসহ জনাকীর্ণ এলাকায় পথচারী ও যাত্রীদের অজ্ঞান করে তারা সর্বস্ব হাতিয়ে নিচ্ছে। পুলিশ ও হাসপাতালসহ সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, গেল এক মাসে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারানোসহ অসুস্থ হয়েছে অর্ধশতাধিক। মুক্তিযোদ্ধা, চিকিৎসক, সাংবাদিক, পুলিশ, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, ছাত্র, শিক্ষক কেউই এদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। মাঝে মাঝে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা গ্রেফতার হলেও কয়েক দিনের মাথায় তারা জামিনে মুক্তি পেয়ে ফের একই অপরাধে জড়াচ্ছে। মাহে রমজানে তত্পরতা বেড়ে যাওয়ায় অজ্ঞান পার্টির বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান চালানোর উদ্যোগ নিচ্ছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। আমরা আশা করব অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের শুধু গ্রেফতার নয়, তারা যাতে তাদের অপরাধের যথাযথ সাজা পায় তা নিশ্চিত করতে হবে। গ্রেফতারকৃত অপরাধীরা আইনের ফাঁক গলিয়ে কেন জামিন পাচ্ছে, সে রহস্যও উদ্ঘাটিত করতে হবে। অজ্ঞান পার্টির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের ও মামলা পরিচালনায় শুভঙ্করের ফাঁকি যাতে না থাকে তা নিশ্চিত হওয়া দরকার।