রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বাড়ছে মাছ উৎপাদন

এ সাফল্য ধরে রাখতে হবে

মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান এখন বিশ্বের মধ্যে চতুর্থতম। আর মাছের রাজা ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশ যে সাফল্য দেখিয়েছে তা অন্য দেশের অনুসরণযোগ্য। এ বছর ইলিশের উৎপাদন অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। মাছে-ভাতে বাঙালি এ পরিচয়টি হারিয়ে যেতে বসেছিল দেড় দশক আগে। গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে মাছ উৎপাদন বেড়েছে পাঁচগুণেরও অনেক বেশি। মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশের সামনে অপার সম্ভাবনা থাকলেও তা কাজে লাগানো সম্ভব হয়নি নানা সীমাবদ্ধতার জন্য। ২০০৬ সালে বাংলাদেশ ভারতকে টপকে বিশ্বের দ্বিতীয় মাছ উৎপাদনকারী দেশে পরিণত হয়। কিন্তু সেই সাফল্য ধরে রাখা যায়নি প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত, মিয়ানমার ও ভিয়েতনাম আরও দ্রুতগতিতে মাছ উৎপাদনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (ফাও) প্রতিবেদনে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করা হয়েছে। এ অগ্রগতির সব প্রশংসা মাছচাষিদেরই প্রাপ্য। কারণ ২০১৩-১৪ অর্থবছরে সরকারের পক্ষ থেকে ১৪ হাজার কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণ করা হলেও তার মাত্র ১০ শতাংশ দেওয়া হয়েছে মাছচাষিদের। সাগরে যারা মাছ ধরেন, তাদের যে কী প্রতিকূল অবস্থার মোকাবিলা করতে হয় সে বিষয়টিও এখন সবার জানা। উপকূল এলাকাজুড়ে দেশি-বিদেশি জলদস্যুদের উৎপাত। বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় বিভিন্ন প্রতিবেশী দেশের ট্রলার অনুপ্রবেশ করে মাছ ধরে নিয়ে যায়। বাংলাদেশি মত্স্যজীবীরা তাদের কাছে অসহায়। বাঙালির পরিচয় ‘মাছে ভাতে বাঙালি’। মাছের প্রতি বাঙালির টান সেই প্রাচীন যুগেও আলোচ্য বিষয় বলে বিবেচিত হতো। মাত্র দেড় লাখ বর্গকিলোমিটারের চেয়েও কম আয়তনের বাংলাদেশের জনসংখ্যা এখন ১৬ কোটিরও বেশি। নদ-নদী, খাল-বিল, পুকুরসহ জলাধারের সংখ্যা হ্রাস পেলেও আধুনিক পদ্ধতিতে মাছচাষের জন্য উৎপাদন বিস্ময়করভাবে বাড়ানো সম্ভব হয়েছে। বর্তমান উৎপাদন ৩৭ লাখ টনেরও বেশি এবং তা চার বছরের মধ্যে ৪৫ ভাগ টনে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। মাছচাষিদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হলে উৎপাদন এক দশকের মধ্যেই অন্তত দ্বিগুণ করা সম্ভব। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে মাছের ক্রমবর্ধমান হিস্যা আরও সন্তোষজনক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ারও সুযোগ রয়েছে। আমাদের মতে, কর্মসংস্থান এবং আমিষ চাহিদা পূরণে মাছ উৎপাদনে আরও গুরুত্ব দেওয়া উচিত।  দেশে পর্যাপ্ত হিমাগার নির্মাণের পাশাপাশি মাছচাষিদের সহজ শর্তে ঋণদানের কথা ভাবতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর